মান্নার নতুন সংগঠন 'গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন'

নতুন সংগঠন ‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’–এর আত্মপ্রকাশ হয়েছে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
নতুন সংগঠন ‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’–এর আত্মপ্রকাশ হয়েছে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তিতে ‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’ নামে একটি নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এ সংগঠনের ঘোষণা দিয়ে জানান, সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলতে থাকবে।

আজ সোমবার মৎস্য ভবনের সামনে সড়কে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলনের ব্যানারে এই সমাবেশ হয়। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না নতুন সংগঠনের বিষয়ে বলেন, ‘আজকে এখানে একটা সংগঠনের কথা বলেছি, সেটা হচ্ছে ‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’। এটা নাগরিক ঐক্যের না, এটা বিএনপির না, এটা কোনো দলের না। এটা সবার।’

হিসাব করেই আন্দোলনে নামছেন জানিয়ে মান্না বলেন, ‘যেভাবে আজ এখানে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, এভাবে সারা দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য, যেটুকু কাজ করার জন্য দরকার, তা করতে হবে। এর মধ্যে যদি বড় কিছু ঘটে, তাহলে তৈরি থাকেন, যেকোনো সময়ে এই সরকারের পতনের জন্য সর্বাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচি দেব। প্রতিজ্ঞা একটা, আমরা এই আন্দোলন কবর, আজ থেকে সেই আন্দোলনের শুরু। আজ থেকেই লড়াই শুরু। এই লড়াই চলবে। যতক্ষণ পর্যন্ত বিজয় অর্জিত না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।’ তিনি জানান, শেখ হাসিনার সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘২০১৪ সালে আমরা দেখেছি রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করা। ২০১৮ সালে আমরা দেখলাম ভোটারদের বাদ দিয়ে নির্বাচন করা হয়েছে। আমরা আশঙ্কা হয়, আগামী দিনে যে নির্বাচন হবে, তা মানুষকে বাদ দিয়ে, যন্ত্র দিয়ে কারচুপি করা হবে, ইভিএম দিয়ে কারচুপি করা হবে। আজকে মানুষের মনে কোনো রকম বিশ্বাস নেই।’ তিনি আরও বলেন, শুধু গণতন্ত্রের সমাধি না, বাক্‌স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা সবকিছু হরণ করা হয়েছে। আসিফ নজরুল আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে সংগ্রাম, সেটা অব্যাহত থাকবে।

আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, সরকারকে প্রশ্ন করলে যদি স্বাধীনতাবিরোধী হয়ে যায়, তাহলে দেশের ১৬ কোটি মানুষই স্বাধীনতাবিরোধী হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, স্বাধীনভাবে কথা বলা যায়—এমন দেশের স্বপ্ন দেখেন। ভিভিআইপির জন্য মুক্তিযুদ্ধ করা হয়নি, করা হয়েছে সাধারণ মানুষের জন্য।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব সরকারের উদ্দেশে বলেন, এরা দেশটা বিক্রি করে দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়। এরা গোষ্ঠীতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছে। এদের রুখতে হবে, এদের বিদায় করতে হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, স্বৈরশাসক, সামরিক শাসন, কিছুই টেকেনি। সরকারকে পদত্যাগ করে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।


জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জগলুল হায়দার, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নুর হোসাইন কাসেমী প্রমুখ।