মাতৃভাষার বই পেলেও পড়া নিয়ে উদ্বেগ

খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে এ বছর নয়টি উপজেলার ৭০৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে। এতে নিয়মিত পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি নিজেদের মাতৃভাষার বইও পাচ্ছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা। তবে বই পেলেও পড়ানোর জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকায় উদ্বেগের মধ্যে আছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা।

আজ বুধবার জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার বাইল্যাছড়ি মুসলিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে বই বিতরণ উৎসবের আয়োজন করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়। সেখানে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত চাকমা ভাষায় ৪১ হাজার ৫৭৬টি, মারমা ভাষায় ২২ হাজার ১০৩ ও ত্রিপুরা ভাষার ২৮ হাজার ২৫টি বই বিতরণ করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শ্রেণিতে পড়ে কৃষক আনাই মারমার ছেলে ক্যাজরিং মারমা। আনাই মারমা নিজেও মাতৃভাষার বই পড়তে পারেন না। বাড়িতেও ছেলেকে পড়ানোর মতো কেউ নেই। শুনেছেন বিদ্যালয়েও মারমা ভাষায় পড়াতে দক্ষ শিক্ষক নেই। আনাই মারমা বলছিলেন, অবস্থা এমন ছেলের বই বাড়িতেই পড়ে থাকবে। পড়া হবে না।

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ মাতৃভাষায় বই পড়াতে পর্যাপ্ত দক্ষ শিক্ষক না থাকার কথা স্বীকার করে খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন বলেন, বর্তমানে খাগড়াছড়ি প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মাতৃভাষায় বই পড়াতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এক থেকে দুই বছরের মধ্যেই বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষায় বই পড়ানোর সক্ষমতা তৈরি হবে।

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী জানান, যে বিদ্যালয়গুলোতে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা শিক্ষার্থী আছে, সেগুলোতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পড়াতে দক্ষ শিক্ষক দেওয়ার চেষ্টা চলছে।