রংপুরে ১৯৯০ ব্যাচের পুনর্মিলনী

বিভিন্ন স্কুলের প্ল্যাকার্ড হাতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। গতকাল জিলা স্কুলের সামনে।  ছবি: প্রথম আলো
বিভিন্ন স্কুলের প্ল্যাকার্ড হাতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। গতকাল জিলা স্কুলের সামনে। ছবি: প্রথম আলো

পুরোনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে কেউ কুশল বিনিময়ে ব্যস্ত। একে অন্যকে বুকে জড়িয়ে ধরছেন কেউ। কেউ খুলেছেন গল্পের ঝাঁপি। যেন ফিরে গেছেন পুরোনো দিনে। বন্ধুদের এমন আবেগ, উচ্ছ্বাস বুঝিয়ে দিল বাঁধন আলগা হয়নি মোটেও, আছে প্রাণে প্রাণে।

রংপুর মহানগরের ২৫টি বিদ্যালয় থেকে ১৯৯০ সালে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসবের উদ্বোধন ছিল গতকাল শুক্রবার। ‘বন্ধুর পথে, বন্ধু সাথে’ স্লোগান নিয়ে দুই দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান শেষ হবে আজ।

গতকাল ঢাকা থেকে আসা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাফিয়া শমী বলেন, পুরোনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে বেশ ভালো লাগছে।

উৎসবে অংশ নিতে গতকাল সকালে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন নিবন্ধনকারীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। বেলা তিনটার দিকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ও ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন এবং ১৯৯০ ব্যাচের মরহুম শিক্ষার্থীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বিকেলে রংপুর জিলা স্কুলের মাঠে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন হয়। এ সময় সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সংগঠনের পতাকা তোলেন উৎসব উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম। এরপর বেলুন ওড়ানো হয়। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ আর মিজানুর রহমান, সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমীন, বীর উত্তম শহীদ সামাদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হামিদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে রংপুর সিটি মেয়র বলেন, ‘এ আয়োজন ঘিরে যে প্রাণের স্পন্দন তৈরি হয়েছে, সেটি যেন আমাকেও স্পর্শ করছে। এমন আয়োজন মহানগরের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৯৯০ সালের এসএসসির ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করেছে। এ বন্ধন যেন ভবিষ্যতেও অটুট থাকে।’

সরেজমিন দেখা যায়, জিলা স্কুলের মাঠের পশ্চিম দিকে টানানো হয়েছে শামিয়ানা। বসানো হয়েছে বিশাল মঞ্চ। আলোকসজ্জায় সেজেছে পুরো উৎসবস্থল। পুনর্মিলনী উৎসবে অংশ নেওয়া সবার পরনে ছিল নীল রঙের টি-শার্ট।

উৎসবে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছেন জিলা স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী আনোয়ার জিন্নাহ। তিনি বলেন, ‘এমন আয়োজন যেন আমাকে আরও বেশি দিন বাঁচিয়ে রাখার প্রেরণা জোগাল।’ রংপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘এই মিলনমেলায় একই সঙ্গে বিভিন্ন স্কুলের চেনা-অচেনা অনেককে দেখতে পেয়ে আনন্দ লাগছে।’

উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে আলোচনা, স্মৃতিচারণাসহ নানা অনুষ্ঠান। সঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।