চট্টগ্রামে কাটা সড়ক সংস্কারের পর নতুন রাস্তা খোঁড়ার অনুমতি

চট্টগ্রাম নগরে পানির পাইপ বসাতে এখন থেকে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির ব্যাপারে আর ঢালাও অনুমতি দেওয়া হবে না। যেসব সড়ক কাটার অনুমতি দেওয়া হবে, তা নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে হবে। পাইপ স্থাপন শেষ হওয়ার পরপরই সংস্কারকাজ সম্পন্ন করতে হবে। এরপর নতুন রাস্তা খোঁড়ার অনুমতি দেওয়া হবে। খোঁড়াখুঁড়ির আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও ওয়াসা যৌথভাবে জরিপ করবে।

নগরের মুরাদপুর মোড়ে ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি। ছবিটি গত বছরের। ফাইল ছবি
নগরের মুরাদপুর মোড়ে ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি। ছবিটি গত বছরের। ফাইল ছবি

পানির পাইপ স্থাপনের কারণে চট্টগ্রাম নগরের জনদুর্ভোগ নিরসনের বিষয়ে ঢাকায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। আজ রোববার দুপুরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহসহ মন্ত্রণালয় ও দুই সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম ওয়াসা পানির পাইপ বসানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে নগরে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়ে এসব সড়ক কাটে সংস্থাটি। দিনের পর দিন সড়কে কাটাকাটির কারণে নগরবাসীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ওয়াসার কাটা সড়কের জন্য শুষ্ক মৌসুমে ধুলোবালুর উৎপাতে ভুগতে হচ্ছে। এসব কারণে সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার ওপর মানুষ ক্ষুব্ধ। এই অবস্থায় জনভোগান্তি কমাতে দুই সংস্থা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে বসে।

বৈঠক সূত্র জানায়, পানির সংকট নিরসনে পাইপ লাইন স্থাপনের বিকল্প নেই। পাইপ বসাতে হলে রাস্তা কাটতে হবে। তবে পাইপ স্থাপনে যাতে মানুষের দুর্ভোগ কম হয়, সে বিষয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিশেষ করে পাইপ বসানোর কাজ শেষ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক সংস্কার করে দিতে হবে। ধুলোবালু যাতে না ওড়ে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোহেল আহমদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আগে প্রকল্পের জন্য সড়ক কাটাকাটির অনুমোদন দেওয়া হতো। এখন ধাপে ধাপে নির্দিষ্ট কিছু সড়ক কাটার অনুমতি দেওয়া হবে। তা সংস্কারের পর নতুন রাস্তা খোঁড়ার অনুমতি দেওয়া হবে। সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির আগে সিটি করপোরেশন ও ওয়াসা যৌথভাবে জরিপ করবে।

খোঁড়াখুঁড়ি কারণে নগরে বেড়েছে ধুলোবালু। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে নগরবাসী। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ফাইল ছবি
খোঁড়াখুঁড়ি কারণে নগরে বেড়েছে ধুলোবালু। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে নগরবাসী। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ফাইল ছবি

এই প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, আগে প্রকল্পের অধীনে রাস্তা কাটার অনুমতি দেওয়া হতো। এখন যেসব রাস্তা কাটা হবে তার তালিকা, পরিমাণ, কাটতে কত দিন লাগবে এবং কত দিনের মধ্যে সংস্কার করা হবে, তা আগেই জানিয়ে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, উন্নয়নকাজ চললে কিছুটা ভোগান্তি হবে। তবে সে ভোগান্তি কতটা সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।

এদিকে সভায় কাটা সড়ক নিজেদের উদ্যোগে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে ওয়াসা। আর সিটি করপোরেশনের কাটা সড়কের সংস্কারের ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই শেষে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত দুই সংস্থার কর্মকর্তারা।