সিলেটে পরীক্ষামূলকভাবে মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু

সিলেট শহরের দরগাহ এলাকার সড়কে নেই কোনো বিদ্যুতের খুঁটি। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: প্রথম আলো
সিলেট শহরের দরগাহ এলাকার সড়কে নেই কোনো বিদ্যুতের খুঁটি। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের প্রথম এলাকা হিসেবে সিলেটে মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু হয়েছে। গত রোববার নগরের প্রথম এলাকা হিসেবে হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ এলাকায় ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইনে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার পর পরীক্ষামূলক সঞ্চালন চালানো হয়।

আজ মঙ্গলবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবি) ‘বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প’ পরিচালকের দপ্তর বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে সিলেট নগরের কেন্দ্রস্থলের এলাকাগুলো তারহীন বিদ্যুৎ লাইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানানো হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকার প্রধান সড়কের দুই পাশে বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ করে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন সফলতার সঙ্গে রূপান্তর করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রকল্প এলাকায় তারহীন বিদ্যুৎ লাইনে রূপান্তরের কাজ শেষ হবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে প্রকল্পের পরিচালক কে এম নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম জায়গা হিসেবে সিলেটে মাটির নিচে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন শুরু হয়েছে, এটা সিলেটবাসীর জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। সিলেটের মানুষের জন্য যেটা করা দরকার তা আমরা একাগ্রতার সঙ্গে করে যাচ্ছি। সিটি করপোরেশন মেয়রও দিনরাত উপস্থিত থেকে কাজের তদারকি করছেন।’ তিনি আরও বলেন, দরগাহ এলাকায় তিন দিনের পর্যবেক্ষণ শেষে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ওই এলাকায় ভূগর্ভস্থ কোনো কাজ করার প্রয়োজন পড়লে সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগের পূর্বানুমতি লাগবে।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, বিউবির অর্থায়নে ও সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পরীক্ষামূলক (পাইলট) প্রকল্পে নগরীতে ১১ কেভি ২৫ কিলোমিটার, শূন্য দশমিক ৪ কেভি ১৮ কিলোমিটার ও ৩৩ কেভি ২ সার্কিট কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে। নগরীর ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকার বিদ্যুৎ সাবস্টেশন কেন্দ্র থেকে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন আম্বরখানা হয়ে যাবে চৌহাট্টা এলাকায়। চৌহাট্টা থেকে একটি লাইন যাবে নগরীর জিন্দাবাজার-কোর্ট পয়েন্টে হয়ে সিলেট সার্কিট হাউস পর্যন্ত। আরেকটি লাইন চৌহাট্টা থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত যাবে। এ কাজ চলমান থাকা অবস্থায় পরীক্ষামূলকভাবে মাটির নিচে বিদ্যুৎ লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহের শুরু করা হয়েছে দরগাহ এলাকা থেকে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সিলেট শহরে প্রাথমিকভাবে প্রায় সাত কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে। এতে ৫০০ আরএম স্কয়ার কেবল ক্যাপাসিটির তার ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া কাজটি গত বছরের মার্চ মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কাজের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোয় আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হওয়ার কথা আছে।

তারহীন বিদ্যুৎ লাইনে রূপান্তরের মাধ্যমে সিলেট নগর ‌স্মাট সিটি হওয়ার দিকে যাত্রা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সিলেটকে স্মার্ট সিটি হিসেবে রূপ দিতে তারের জঞ্জাল (বৈদ্যুতিক লাইন) পাতালে নেওয়া হচ্ছে। পাতাল বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণের ফলে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাবে সিলেটবাসী। এ প্রকল্প শেষ হলে পর্যায়ক্রমে পুরো শহরের বৈদ্যুতিক লাইন পাতালে চলে যাবে।