মা খুঁজছেন মেয়েদের, করতে চান আদর

কণিকা আক্তারের একটু জ্ঞান ফিরলেই জিজ্ঞেস করছেন স্বামী ও ছেলে-মেয়েদের কথা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ২৮ ডিসেম্বর। ছবি: সৌরভ দাশ
কণিকা আক্তারের একটু জ্ঞান ফিরলেই জিজ্ঞেস করছেন স্বামী ও ছেলে-মেয়েদের কথা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ২৮ ডিসেম্বর। ছবি: সৌরভ দাশ

তিন দিন আগে জ্ঞান ফিরলেও এখনো কথা বলতে পারে না তাহসিন সাইফ খান মন্টি। পরিচিত কাউকে দেখলে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকায় সে। ১০ দিন আগে সীতাকুণ্ডে দুর্ঘটনায় এ শিশু হারিয়েছে তাঁর বাবা ও দুই বোনকে। একই দুর্ঘটনায় আহত তাঁর মা কণিকা আক্তারও ভালো নেই। তাঁর হাত-পাসহ কোমরের হাড় ভেঙে গেছে। সব সময় খুঁজছেন মেয়েদের। দুজনেই বর্তমানে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন আছেন।

বান্দরবানে বেড়ানো শেষে গত ২৮ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক সাইফুজ্জামান পিন্টু পরিবার নিয়ে প্রাইভেটকারে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট-বন্দর বাইপাস সংযোগ সড়ক এলাকায় একটি লরির ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে যায় তাঁদের বহনকারী প্রাইভেটকারটি। সাইফুজ্জামান নিজেই প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন। এতে সাইফুজ্জামান ও তাঁর দুই মেয়ে আশরা আনাম খান (১৩) ও তাসমিন জামান খান (১১) নিহত হন।

আহতদের স্বাস্থ্যের অবস্থা জানতে আজ রাত সোয়া নয়টায় যোগাযোগ করা হয় সাইফুজ্জামানের বড় ভাই ভাই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক এস এম মোস্তফা কামাল খানের সঙ্গে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, আজ কণিকা আক্তারের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় ভেঙে গেছে। অন্যদিকে প্রায় এক সপ্তাহ পর গত শনিবার শিশুপুত্র মন্টির জ্ঞান ফিরে। তবে সে এখনো কথা বলতে পারে না।

কণিকা আক্তারকে এখনো স্বামী ও মেয়ের মৃত্যুর কথা জানানো হয়নি বলে জানান মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, তাঁকে বলা হয়েছে মেয়েদের ও সাইফুজ্জামান অন্য ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছে। তিনি স্বজনদের মেয়েদের আদর করার জন্য তাদের কাছে যাওয়ার অনুরোধ করেন। চিকিৎসকদের অজুহাত দেখিয়ে তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে রাখা হচ্ছে।