মজনু 'সিরিয়াল রেপিস্ট': র্যাব

গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিকে বুধবার র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আনা হয়। র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টার, কারওয়ান বাজার, ঢাকা, ৮ জানুয়ারি। ছবি: সাজিদ হোসেন
গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিকে বুধবার র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আনা হয়। র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টার, কারওয়ান বাজার, ঢাকা, ৮ জানুয়ারি। ছবি: সাজিদ হোসেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া একজন ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ বা ‘ক্রমিক ধর্ষক’। ভিক্ষুক বা প্রতিবন্ধী নারীরা ছিলেন তাঁর মূল শিকার । মজনুকে গ্রেপ্তার করার পর আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব। গ্রেপ্তার হওয়া মজনু চুরি-ছিনতাইও করতেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী গত রোববার রাতে কুর্মিটোলা এলাকায় ধর্ষণের শিকার হন। তিনি বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে কুর্মিটোলা বাস স্টপেজে নামেন তিনি। পরে অন্য যানবাহনের জন্য ফুটপাত ধরে হাঁটছিলেন। হঠাৎ তাঁকে পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে ফুটপাতের পাশের ঝোপে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ধর্ষণের শিকার হন। ধর্ষণের শিকার ছাত্রী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন।

ধর্ষণের এই ঘটনায় ছাত্রীর বাবা রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, গতকালই আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাটির দায়িত্ব ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) দেওয়া হয়েছে।

র‍্যাব বলছে, গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির বয়স ২৮ বছর। গতকাল মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্ষণের শিকার হওয়া ছাত্রীর খোয়া যাওয়া মুঠোফোন ও অন্যান্য সামগ্রী কথিত মজনুর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মজনু মুঠোফোনটি অরুণা নামের একটি মেয়ের কাছে বিক্রি করেন। অরুণা আবার বিক্রি করেন খায়রুল হক নামের এক ব্যক্তির কাছে। গতকাল অরুণা ও খায়রুলকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব নিশ্চিত হয়—আসল অপরাধী কে।

আজ বেলা একটার পরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন-কাশেম বলেন, ধর্ষণের আগে মজনু ওই এলাকায় ওত পেতে ছিলেন। তিনি একজন ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’।

কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, মজনু ধর্ষণের পর মেয়েটিকে হত্যার চেষ্টাও চালান। মেয়েটিকে অজ্ঞান করতে কোনো ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করেননি মজনু। এই ঘটনা ঘটানোর পর মজনুর মধ্যে কোনো অনুশোচনা বোধও নেই।

সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, মজনুর বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ায়। ঘটনা ঘটানোর পর তিনি নরসিংদী চলে যান। তবে কাল সারা দিন বনানী স্টেশনে ছিলেন।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে আজ জানানো হয়, গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির ছবি ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে দেখানো হয়েছে। তিনি তাঁকে ধর্ষক বলে শনাক্ত করেছেন।

সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘ভিকটিম (ধর্ষণের শিকার মেয়েটি) বলেছেন, সব চেহারা ভুলে গেলেও এই চেহারা ভুলে যাব না।’

ধর্ষণের এই ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ-মানববন্ধন হয়।