এক কিলোমিটার সড়ক পাকা করবে কে?

প্রত্যন্ত এলাকার একটি সড়ক। সড়কটির দুই পাশ পিচঢালাই করা। মাঝখানে এক কিলোমিটার কাঁচা। এতে যশোর ও ঝিনাইদহের দুটি উপজেলার হাজারো মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা এলজিইডি তাদের সীমানার আধা কিলোমিটার বাকি রেখে সড়ক পাকা করেছে। একইভাবে যশোরের চৌগাছা উপজেলা এলজিইডি আধা কিলোমিটার বাদ রেখে সড়ক পাকা করেছে। এতে চৌগাছার রসুলপুর গ্রামের আধা কিলোমিটার এবং মহেশপুরের ইদ্রাকপুর গ্রামের আধা কিলোমিটার কাঁচা রয়ে গেছে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, দুই উপজেলার স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহেলা ও অনাগ্রহের কারণে এই এক কিলোমিটার রাস্তা পাকা হয়নি। এ কারণে এই এক কিলোমিটার দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিন চৌগাছা ও মহেশপুর উপজেলার মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

রসুলপুর ও ইদ্রাকপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, তাঁরা এলজিইডির চৌগাছা ও মহেশপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সড়কের এই অংশ পাকা করার জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু অনুরোধ করেও কোনো লাভ হয়নি। গোটা রাস্তা পাকা হলেও মাঝের এই এক কিলোমিটারের জন্য যানবাহন চলাচল করতে পারে না। বিশেষ করে বর্ষাকালে পথচারীদের কষ্ট করে সড়কে অংশ দিয়ে চলাচল করতে হয়।

সরেজমিনে ওই এলাকায় দেখা যায়, যশোরের চৌগাছা উপজেলার পুড়াপাড়া বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে আন্দুলিয়া সীমান্তে একটি রাস্তা চলে গেছে। এই রাস্তার আরেকটি অংশ রসুলপুর-ইদ্রাকপুর হয়ে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মান্দারতলা বাজারে গিয়ে মিশেছে। পুড়াপাড়া থেকে মান্দারতলার দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। রাস্তাটি ভারত সীমান্তবর্তী যশোরের চৌগাছা ও ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সংযোগ স্থাপন করেছে।

রসুলপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম জানান, তাঁরা চৌগাছা উপজেলার বাসিন্দা হলেও নানা প্রয়োজনে মহেশপুরে যেতে হয়। কিন্তু রাস্তাটির মাঝের অংশ বর্ষার সময় কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। রাস্তায় কর্দমাক্ত থাকায় তাঁরা ওই পথ দিয়ে চলাচল করতে পারেন না। তিনি আরও জানান, চৌগাছা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েক বছর আগে রসুলপুর গ্রামের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মাণ করেছে। তারা এই রাস্তা তৈরির সময় চৌগাছা সীমানার আধা কিলোমিটার পাকা করার কাজ বাদ রেখে দেয়।

আমিরুল ইসলাম আরও জানান, মহেশপুরের এলজিইডি কর্তৃপক্ষ তাদের সীমানার আধা কিলোমিটার রেখে রাস্তাটি পাকা করেছে। কেন উভয় পক্ষ এভাবে বাদ রেখে পাকা করা হয়েছে, তা তাঁদের জানা নেই। তবে তাঁরা সংশ্লিষ্ট কার্যালয়গুলোতে যোগাযোগ করলে তারা এ জন্য একে অপরকে দোষারোপ করে। চৌগাছা কর্তৃপক্ষ বলছে, এটা মহেশপুর করবে। আর মহেশপুর কর্তৃপক্ষ বলছে, এই কাজ চৌগাছা করবে।

মহেশপুর উপজেলার ইদ্রাকপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল লতিফ জানান, দুই অফিসের ঠেলাঠেলির কারণে তাদের রাস্তাটি পাকা হচ্ছে না। বছরের বেশির ভাগ সময় এই রাস্তার কাঁচা অংশ চলাচলের অনুপযোগী থাকে। ফলে পুড়াপাড়া থেকে যাদবপুর আসা-যাওয়া করা মানুষের কষ্টের শেষ থাকে না। এই রাস্তার দুই পাশের সাহাপুর, রসুলপুর, ইদ্রাকপুর ও মান্দারতলার মানুষের কষ্ট করেই চলাচল করতে হয়।

এক কিলোমিটার রাস্তা পাকা না করার বিষয়ে যশোর চৌগাছা  এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মতিন জানান, ‘আমি কিছুদিন আগে এই উপজেলায় যোগদান করেছি। যে কারণে  বিস্তারিত জানি না । তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব এবং ওই রাস্তা যাতে দ্রুত পাকা করা যায়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা প্রকৌশলী সেলিম রেজা জানান, বিষয়টি তিনি জানেন। দ্রুত রাস্তাটি পাকা করার কাজ শুরু হবে বলে আশা করছেন তিনি।