নিপীড়নের অভিযোগে উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত
উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক নিয়োগের ভাইভা বোর্ডে এক নারী প্রার্থীকে বিব্রতকর প্রশ্ন করে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে। ওই প্রার্থী বিশ্ববিদ্যালয়টিরই প্রাক্তন শিক্ষার্থী। এ নিয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে গতকাল বুধবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বাংলা ডিসিপ্লিনের (বিভাগের) কিছু শিক্ষার্থী।

তবে উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও বিক্ষোভ সমাবেশকে ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, যত দূর মনে পড়ে ওই নিয়োগ সাক্ষাৎকার হয়েছে প্রায় দেড় বছর আগে। এর মধ্যে ওই–সংক্রান্ত কোনো কথাই ওঠেনি। তা ছাড়া একটি সাক্ষাৎকার বোর্ডে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক থাকেন। সেখানে এমন প্রশ্ন কীভাবে করা সম্ভব, সেটি নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তোলেন তিনি।

উপাচার্যের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে যে কয়েকজন শিক্ষক জড়িত আছেন, তাঁদের মধ্যে বাংলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষকও রয়েছেন।

গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের হাদী চত্বরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে এর প্রতিকার দাবি করেন। তাঁরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকের কাছে যদি শিক্ষার্থীরা নিরাপদ না হন, তাহলে আমরা কার কাছে যাব। এ কারণেই এর প্রতিবাদে আমাদের পথে নামতে হয়েছে।’

ঘটনার শিকার ওই প্রাক্তণ শিক্ষার্থী ৬ জানুয়ারি নিজের ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘...স্বল্প সময়ের নিয়োগ বোর্ডেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয় নারীর হাফপ্যান্ট পরিধান–সংক্রান্ত নানাবিধ আপত্তিকর প্রশ্ন তুলে আমাকে বিব্রত করেছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে নিয়ে দুর্নীতিসহ নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু একজন নিপীড়ক হিসেবে তাঁকে কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করেনি। জানি না ওই মুহূর্তে নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত পরীক্ষকবৃন্দ কী ভেবেছিলেন। সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে মানসিক ধর্ষণ যদি বৈধ হয়, তবে ব্যস্ত পথে শিক্ষার্থী ধর্ষণ তো আরও বৈধতা পাবে।...’

ওই প্রার্থী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভাইভা বোর্ড শুরু থেকেই আমার প্রতিকূলে ছিল। কক্ষে ঢোকার পর একের পর এক মেয়েদের হাফপ্যান্ট পরা, মেয়েদের সিগারেট খাওয়াসহ নানা আপত্তিকর প্রশ্ন করা হয়। এটা আমার জন্য খুবই বিব্রতকর ছিল।’

ওই ভাইভা বোর্ডে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রধান এবং কলা ও মানবিক স্কুলের (অনুষদ) ডিন অধ্যাপক শেখ রজিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ওই ভাইভা বোর্ডে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন অধ্যাপকসহ আমিও ছিলাম। শুরুতেই ওই ছাত্রীর প্রতি উপাচার্য এমন আচরণ করেন যে আমরা সবাই বিব্রত হই। পরে বিষয়টিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও উপাচার্য একের পর এক বিব্রতকর প্রশ্ন করে তাঁকে হেনস্তা করেন।’