মুক্তির জন্য সামগ্রিক যুদ্ধ আজও শেষ হয়নি: গণপূর্তমন্ত্রী

সম্প্রীতির বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সম্প্রীতির বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ সময় পরেও মুক্তির জন্য সামগ্রিক যুদ্ধ আজও শেষ হয়নি। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিতরা এখনো নিঃশেষ হয়নি। দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস, মাদক ও অনৈতিকতার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টার যে যুদ্ধ, তা আজও শেষ হয়নি।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সম্প্রীতির বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ ম রেজাউল করিম এসব কথা বলেন। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সম্প্রীতির বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী শাসকেরা সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাঁরা সেদিন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। তৎকালীন শাসক জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের উৎসাহ প্রদান করেছিলেন। এ জন্য সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী মামলায় বলা হয়েছে, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রদ্রোহী, রাষ্ট্র দখলকারী তস্কর।’

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ সময় পরেও মুক্তির জন্য সামগ্রিক যুদ্ধ আজও শেষ হয়নি। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিতরা এখনো নিঃশেষ হয়নি। তাদের ধারাবাহিকতায় নতুন শত্রু মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এ কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে গড়তে তাঁকে মনে ধারণ করে আমাদের সঞ্জীবনী শক্তিকে উজ্জীবিত করতে হবে। আমাদের আত্মস্থ করতে হবে আমরা কোথায় পৌঁছতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শুধু বক্তৃতা-বিবৃতিতে নয়, সবচেয়ে বড় প্রয়োজন মনে-প্রাণে ধারণ করা। দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস, মাদক ও অনৈতিকতার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টার যে যুদ্ধ, তা আজও শেষ হয়নি।’

সাংবিধানিকভাবে দেশকে কোনো বিশেষ ধর্মের রাষ্ট্র করার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, এ দেশ হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানের দেশ। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে যুক্ত করেছেন কোনো বিশেষ ধর্মের ব্যক্তি আলাদা সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। সবার জন্য রাষ্ট্রীয় সুবিধা এক থাকবে। বাহাত্তরের সংবিধানের ধারণা তিনি পুনরায় প্রতিস্থাপন করেছেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সম্প্রীতির বাংলাদেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সম্প্রীতির বাংলাদেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর দেশে ভয়ংকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, সে সময়ের বাংলাদেশের কথা ভুলে গেলে চলবে না। সম্প্রীতির বাংলাদেশ চাইতে গেলে সাম্প্রদায়িকতা যারা সৃষ্টি করে, তাদের নিয়ে স্পষ্ট কথা বলতে হবে। শেখ হাসিনা শুধু রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি হিসেবে দুঃসাহস দেখিয়ে দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র করার সব প্রচেষ্টা প্রতিহত করেছেন এবং আইনানুগ প্রক্রিয়ায় সেটাকে দমন করেছেন। সম্প্রীতির বাংলাদেশে যে ফাটল ধরেছিল, যে ব্যবধান সৃষ্টি করা হয়েছিল, সেই বিষবাষ্প এখনো শেষ হয়নি। এই বিষবাষ্প দূর করতে সবাই মিলে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের নিবিড় বন্ধনের বাঙালিত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

সম্প্রীতির বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব ডা. মামুন আল মাহতাবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. কামরুল হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য ড. মো. সামাদ প্রমুখ।