সিইসিকে কমিশনার মাহবুবের অনানুষ্ঠানিক চিঠি

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। ফাইল ছবি
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। ফাইল ছবি

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মন্ত্রী ও সাংসদদের নির্বাচনী কার্যক্রম এবং প্রচারে অংশ নেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে লেখা একটি অনানুষ্ঠানিক চিঠিতে নিজের এই উদ্বেগের কথা জানান মাহবুব তালুকদার। ইসির সচিবালয় সূত্র জানায়, আজ বৃহস্পতিবার এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে মাহবুব তালুকদার বলেছেন, তিনি মনে করেন, এতে সবার জন্য সমান সুযোগ নষ্ট হবে, নির্বাচনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

সিইসির পাশাপাশি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেম ও দক্ষিণের নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেনকেও এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।

চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুব তালুকদার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সূত্র জানায়, মাহবুব তালুকদার চিঠিতে বলেন, ‘আমি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কার্যক্রম ও প্রচারে সংসদ সদস্যরা অংশ নিচ্ছেন। এটি সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা–২০১৬–এর লঙ্ঘন।’

অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নির্বাচনপূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না, বিধিমালার এমন বিধানের কথা উল্লেখ করে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, তাঁরা কীভাবে এই নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করছেন, তা বোধগম্য নয়। ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ এই নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করলে সবার জন্য সমান সুযোগ বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বিনষ্ট হবে। অন্যদিকে, এতে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নির্বাচন আচরণ বিধিমালা কঠোরভাবে পরিপালন করা একান্ত আবশ্যক।

মাহবুব তালুকদারের চিঠির বিষয়ে সিইসি কে এম নূরুল হুদার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি এ ধরনের কোনো চিঠি পাননি।

এর আগে ২০১৮ সালের ২৪ মে একই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সভায় ভিন্নমত প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সেখানে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণায় সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণের সুযোগ দিলে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট হবে। নির্বাচনের সময় সংসদ সদস্যরা ভোটদান ছাড়া নিজের এলাকায় না গেলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়বে না। বরং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তাঁদের উপস্থিতিতে ভোট অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না।