ভুয়া সঞ্চয়পত্র দেখিয়ে সাড়ে আট কোটি টাকা ঋণ নেন তাঁরা

ভুয়া সঞ্চয়পত্র জমা দিয়ে ব্যাংক ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে এইচএমএ বারিক ও তাঁর স্ত্রী মরশিদা আফরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
ভুয়া সঞ্চয়পত্র জমা দিয়ে ব্যাংক ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে এইচএমএ বারিক ও তাঁর স্ত্রী মরশিদা আফরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ভুয়া সঞ্চয়পত্র জমা দিয়ে দুটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাঁরা হলেন এইচ এম এ বারিক ওরফে বাদল হাওলাদার ওরফে মোস্তাক আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী মরশিদা আফরিন। গত মঙ্গলবার খুলনার খালিশপুর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। দুদিনের রিমান্ড শেষে আজ শনিবার ওই দম্পতিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে আজ দুপুরে ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াডের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেন বলেন, ২০০৪ সালে ২১ সদস্যের একটি প্রতারক চক্র ২১টি ভুয়া সঞ্চয়পত্রের বিপরীতে বেসরকারি এবি ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করে। এর সঙ্গে এবি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক আসিরুল হক জড়িত ছিলেন। গ্রেপ্তার দম্পতি ওই চক্রের সদস্য। তারা জালিয়াতি করে গুলশান ও উত্তরায় তিনটি ভবন, ফ্ল্যাট, গাড়ি ও জমির মালিক হয়েছেন। তাঁদের ব্যাংক হিসাবে জালিয়াতি করে উপার্জিত দুই কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে সিআইডি।

সিআইডি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন, ২০০৪ সালে জালিয়াতি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এবি ব্যাংকটি মামলা করে। তবে তখন থেকে পালিয়ে ছিলেন মোস্তাক আহমেদ। ওই মামলায় তার সাজাও হয়। তিনি সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ভারতে পালিয়ে ছিলেন। তিনি ২০১১ সালে গোপনে দেশে ফিরে আবার জালিয়াতি শুরু করেন। ১৬ বছর ধরে পলাতক মোস্তাককে খুঁজছিল পুলিশ। ওই মামলায় এবি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক আসিরুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৬ সালে তিনি তিন মাস কারাভোগ করেন। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন এবং হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তবে এর সঙ্গে ব্যাংকের আর কোনো কর্মকর্তা জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখছে সিআইডি। ব্যাংক থেকে ভুয়া সঞ্চয়পত্র দিয়ে ঋণ নিয়ে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০০৪, ২০১১ ও ২০১৬ সালে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা পশ্চিম ও মোহাম্মদপুর থানায় সাতটি মামলা করে। ওই মামলাগুলো সিআইডি তদন্ত করছে।

ফারুক হোসেন জানান, চক্রটির মূল হোতা একজন শিল্পপতি। তাঁর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ব্যবসা আছে। তবে তদন্তের স্বার্থে ওই শিল্পপতির নাম গোপন রেখেছে সিআইডি। ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ করে ওই ব্যক্তি ব্যবসা করে শিল্পপতি হয়েছেন। তাঁকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।