পরীক্ষা ছাড়া গোদাগাড়ীর টমেটো বাজারজাত নয়

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে হরমোন স্প্রে করে পাকানোর জন্য কাচা টমেটো তুলে রাখা হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে হরমোন স্প্রে করে পাকানোর জন্য কাচা টমেটো তুলে রাখা হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো

গোদাগাড়ীতে কাঁচা টমেটোতে স্প্রে করতে দেখে গাড়ি থেকে নামলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি টমেটোর পরিপক্বতা যাচাই ছাড়া হরমোন স্প্রে করে বাজারজাত না করার নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী এরই মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে দুজন বিশেষজ্ঞ সেখানে পৌঁছেছেন। আগামীকাল রোববার থেকে তাঁরা মাঠ থেকে বাজারজাত হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ পরীক্ষা করে দেখবেন।

সারা দেশের মধ্যে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শীতকালীন হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ হয়।

আজ শনিবার সকালে মন্ত্রী গাড়িতে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক হয়ে রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিলেন। রাস্তার পাশে গোদাগাড়ীর সিঅ্যান্ডবি এলাকায় টমেটোতে স্প্রে করতে দেখেই মন্ত্রী গাড়ি থেকে নামেন। কেন এটা স্প্রে করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে কথা বলেন কৃষকদের সঙ্গে। ডাকেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল ইসলাম সরকার ও কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামকে। পরীক্ষার আগে গোদাগাড়ী থেকে টমেটো বাজারজাত না করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে হরমোনের পরিমিত মাত্রা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। তারপরও তিনি আবার পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী ঢাকায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছেন। সেখান থেকে একটি দল ভ্রাম্যমাণ ল্যাবরেটরি নিয়ে আসবে। তাদের পরীক্ষার পরই টমেটো বাজারজাত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’

স্প্রে করে পাকানো টমেটো। এখান থেকে টমেটো চলে যায় বিভিন্ন জেলায়। গোদাগাড়ী, রাজশাহী। ছবি: প্রথম আলো
স্প্রে করে পাকানো টমেটো। এখান থেকে টমেটো চলে যায় বিভিন্ন জেলায়। গোদাগাড়ী, রাজশাহী। ছবি: প্রথম আলো

এই কৃষি কর্মকর্তা জানান, এর আগে তাঁরা টমেটোর হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করেছেন। দেখা গেছে, এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। আর খুব স্বল্প সময়ই টমেটোর ওপরে হরমোনটি থাকে। তাই তাঁরা টমেটোতে এই হরমোন স্প্রে করতে কোনো বাধা দেন না। কিন্তু তারপরও নেতিবাচক প্রচারে টমেটোর বাজার খারাপ হয়ে আসছে। কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ কারণে দিন দিন টমেটো চাষ কমছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায় , প্রতি মৌসুমে গোদাগাড়ীতে টমেটো নিয়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। কয়েক বছর আগেও শীতকালে গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ হতো। কিন্তু কয়েক বছর থেকে চাষের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে মাত্র ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে।