দেশে গণতন্ত্র নেই, ধর্মনিরপেক্ষতা নেই: সিপিবি সভাপতি

মণি সিংহের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য দেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১১ জানুয়ারি। ছবি: আহমেদ দীপ্ত
মণি সিংহের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য দেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১১ জানুয়ারি। ছবি: আহমেদ দীপ্ত

দেশে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা থেকে আমাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, ধর্মনিরপেক্ষতা নেই। দেশের স্বাধীন ও সার্বভৌম অস্তিত্ব নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে আমেরিকা, সৌদি আরব, ভারতের মাধ্যমে।’


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে আজ শনিবার বিকেলে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠানে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এসব কথা বলেন। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের পুরোধা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা কমরেড মণি সিংহের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে কমরেড মণি সিংহ মেলা উদ্‌যাপন কমিটি।

সভায় মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ পালন করে বা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে শুধু আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা বর্ণনা করা হলে তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এখন বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তুলে ধরা হচ্ছে। এতে কোনো ভুল নেই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বাদে আরও অসংখ্য নেতার অবদানকে উল্লেখ না করা অন্যায়।

সিপিবি সভাপতি বলেন, মণি সিংহের জীবন আরও গভীরভাবে পাঠ করা উচিত। স্বাধীনতার চিন্তা কমিউনিস্টদের মধ্যে ছিল, বঙ্গবন্ধুর মধ্যেও ছিল। ইতিহাসের কথাগুলো বলা প্রয়োজন। জাতীয়তাবাদীর পাশাপাশি বামপন্থী আন্দোলনও ছিল। এই শপথ নিয়েই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের ৮৫ শতাংশ শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষ ছিলেন। স্বাধীনতার ফসল তাঁরা পাচ্ছেন কি না, সে প্রশ্নের জবাব দিতে তৈরি হতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ মণি সিংহের লেখা বই ‘জীবনসংগ্রাম’ থেকে চারটি উদ্ধৃতি পড়ে শোনান। তিনি বলেন, মণি সিংহ তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ভবিষ্যতের অগ্রগতির জন্য অতীত জানা প্রয়োজন। মণি সিংহ এখনো প্রাসঙ্গিক। দেশের জনগণের সামনে তিনি চিরকাল আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।

সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সাজেদুল হক, মণি সিংহের ছেলে দিবালোক সিংহ, অধ্যাপক এ এন রাশেদা, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির নেতা এস এম সবুর, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের নেতা অসিতবরণ রায়, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় প্রমুখ। সভায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের শিল্পীরা। সভার পাশেই ছিল মণি সিংহের জীবনালেখ্য নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী।