শিশু তোফাজ্জল হত্যা: চাচা-ফুফুসহ সাতজন গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্র তোফাজ্জল হোসেন (৭) হত্যার ঘটনায় তার দুই চাচা, এক ফুফুসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তোফাজ্জলের বাবা জুবায়ের হোসেন বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর ওই সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন তোফাজ্জল হোসেনের দুই চাচা সালমান হোসেন (২৫) ও লোকমান হোসেন (২১), ফুফু শিউলি আক্তার (১৯), শিউলির স্বামী সেজাউল কবির (২৫), সেজাউলের বাবা কালা মিয়া (৫৫), হাবিবুর রহমান ওরফে হবি (৪৮) ও তাঁর ছেলে সারোয়ার হাবিব (২৫)। তাঁরা সবাই একই গ্রামের বাসিন্দা ও একে অন্যের প্রতিবেশী।

গতকাল শনিবার সকালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামে এক প্রতিবেশীর ঘরের পেছন থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় শিশু তোফাজ্জলের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ও একটি চোখ ওপড়ানো ছিল।

পুলিশ ও শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার বিকেলে তোফাজ্জল খেলতে বের হয়ে আর ঘরে ফেরেনি। খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে লিখিতভাবে জানায় তার পরিবার। এরপর গতকাল শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে জুবায়ের হোসেনের প্রতিবেশী হাবিবুর রহমানের ঘরের পেছন থেকে তোফাজ্জলের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর গ্রেপ্তার হওয়া সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে গতকাল রাতে তোফাজ্জল হোসেনের বাবা মামলা দায়ের করলে পুলিশ ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখায়। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে শিশু তোফাজ্জলকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী বলছেন, পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাহিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের আজ রোববার আদালতে হাজির করে প্রত্যেককে ৫ থেকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার দিন ধার্য করেছেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত ১৪ অক্টোবর সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় পরিবারের সদস্যদের হাতেই নির্মমভাবে খুন হয় পাঁচ বছরের শিশু তুহিন। গ্রামের অন্যদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তুহিনের বাবা-চাচা-চাচাতো ভাই মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান।