টাকা না আনায় স্ত্রীর চোখ-মুখ থেঁতলে দেওয়া হয়েছে

নারী নির্যাতন। প্রতীকী ছবি
নারী নির্যাতন। প্রতীকী ছবি

বাবার বাড়ি থেকে বিদেশ যাওয়ার টাকা না আনায় স্ত্রীকে নির্যাতন করে তাঁর চোখ ও মুখ থেঁতলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে হবিগঞ্জের মাধবপুর থানায় মামলা হয়েছে। পরে ওই নারীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নির্যাতনের শিকার ওই নারীর নাম ফারজানা আখতার (২৫)। আর তাঁর অভিযুক্ত স্বামী হলেন শফিকুল ইসলাম।

পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মাধবপুর উপজেলার দেবপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর মেয়ে ফারজানা আক্তার ওরফে হ্যাপির সঙ্গে ২০১৪ সালের ১৩ জুলাই একই উপজেলার বৈষ্ণবপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম ওরফে বাবুলের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ফারজানার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক বাবদ শফিকুল ইসলামকে নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা ও দুই লাখ টাকার জিনিসপত্র দেওয়া হয়। বিয়ের দুই বছর পর শফিকুল বিদেশ যাওয়ার জন্য ফারজানার পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ফারজানার বাবা তিন লাখ টাকা দিয়ে শফিকুলকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠান। তবে শফিকুল সেখানে বেশি দিন টিকতে না পেরে দেশে ফিরে আসেন। কিছুদিন যাওয়ার পর সম্প্রতি তিনি আবারও স্ত্রীকে আরও তিন লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এর জেরে গত শনিবার সকালে ফারজানাকে শারীরিক নির্যাতন ও মারধর করেন শফিকুল। একপর্যায়ে তাঁর বাঁ চোখ ও মুখ থেঁতলে দেন। এতে ওই গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।

এ খবর পেয়ে ফারজানার ভাই শাদাত হোসেন গতকাল দুপুরে মাধবপুর থানার পুলিশের সহযোগিতা চান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আধুনিক হাসপাতালে নেওয়া। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।

ফারজানার ভাই শাদাত হোসেন বলেন, তাঁর বোনের অবস্থা বেশি ভালো নয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর বাঁ চোখের ক্ষতি হয়েছে বেশি। শরীরের নানা অংশে বড় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আরও দেরিতে হলে তাঁর বোনকে বাঁচানো সম্ভব ছিল না।

ওই ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শফিকুল পলাতক। তাঁর মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বলেন, খবর পেয়েই পুলিশ নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে উদ্ধার করে। তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়, যে কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই নারীর ভাই বাদী হয়ে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।