পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। ঢাকার বায়ুর মান ও জনবল বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। আজ সোমবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বায়ুদূষণ রোধে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ক শুনানি নিয়ে আজ এ আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আদালত বায়ু দূষণ রোধে কয়েক দফা নির্দেশনাও দিয়েছেন।

নির্দেশনার মধ্যে অননুমোদিত বা পরিবেশ বিভাগের অনুমোদন ছাড়া বিভিন্ন ধরনের টায়ার পোড়ানো ও ব্যাটারির রিসাইক্লিং বন্ধ করতে এক মাসের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় প্রবেশকারী ও চলাচলকারী বর্জ্য বহনকারী যান ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বালু সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে দেওয়ার (বস্তায়) ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়। আইন অনুসারে, নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি কালো ধোয়া উৎপাদনকারী যান জব্দ করতে এবং যেগুলোর ইকোনমিক লাইফ শেষ হয়ে গেছে সেগুলোর চলাচল নিষিদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বায়ুদূষণ রোধে তাৎক্ষণিক ১২ দফা নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন দেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এর শুনানি নিয়ে ওই সব নির্দেশনা দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী সাঈদ আহমেদ ও উত্তরের পক্ষে আইনজীবী তৌফিক ইনাম শুনানিতে অংশ নেন।

গত ২৬ নভেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এক আদেশে ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণের কারণ ও দূষণ কার্যক্রম রোধ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলার অবৈধ ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে বিবাদীদের আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়ে ৫ জানুয়ারি পরবর্তী দিন রাখেন আদালত।

এর ধারাবাহিকতায় পরিবেশসচিব এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে গতকাল আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে শুনানি হয়।

‘ঢাকার বাতাসে নতুন বিপদ’ শিরোনামে গত বছরের ২১ জানুয়ারি প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটি যুক্ত করে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবি’র পক্ষে গত ২৭ জানুয়ারি একটি রিট করা হয়। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দেন। সেদিন আদালত বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর রাস্তাসহ নির্মাণাধীন জায়গা ঘিরে দেওয়া, ধুলামাখা স্থানে দুবেলা পানি ছিটানো ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে নির্দেশ দেন। এরপর রাজধানীতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে এইচআরপিবি আরেকটি আবেদন করে। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৬ নভেম্বর আদেশ দেওয়া হয়।