মহাসড়কে ছড়ানো-ছিটানো লাশের টুকরো

নিহত দোকানদার নাছির উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
নিহত দোকানদার নাছির উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে মো. নাছির উদ্দিন (২৬) নামের এক দোকানদারের লাশের ছড়ানো-ছিটানো টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলার নাওতলা এলাকার প্রায় দেড় কিলোমিটার জায়গা থেকে আজ সোমবার সকালে লাশের টুকরোগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। পরে টুকরোগুলো ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

খবর পেয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন, মহাসড়ক পুলিশ, চান্দিনা থানার পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ বলছে, নাছিরকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করার পর লাশ কয়েক টুকরো করে মহাসড়কে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে বিভিন্ন যানবাহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে লাশের টুকরোগুলো।

নিহত নাছির উদ্দিন চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের নাওতলা গ্রামের রবিউল্লার ছেলে। মহাসড়কের পাশে নাওতলা মাদ্রাসার পাশে একটি টং দোকানে চা, পিঠা ও বিস্কুটের ব্যবসা করতেন তিনি। গতকাল রোববার রাতে ওই দোকানেই তাঁকে কুপিয়ে হত্যার পর দুর্বৃত্তরা লাশ মহাসড়কে ফেলে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, আজ সোমবার ভোরে নাছিরের টং দোকানের সামনে এসে তাঁরা দেখেন, দোকান খোলা, কিন্তু ভেতরে মানুষ নেই। পরে দোকানের ভেতরে পিঠার পাতিল ও বেড়ার মধ্যে রক্তের ছোপ দেখতে পেয়ে তাঁরা চিৎকার দেন। পরে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে মহাসড়কের অন্তত দেড় কিলোমিটার জায়গা থেকে নাছিরের লাশের ছিন্নভিন্ন অংশ উদ্ধার করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের টুকরোগুলো ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

নাছিরের দোকানের পাশেই নাওতলা এলাকার বাচ্চু চেয়ারম্যান মার্কেটে নৈশপ্রহরীর কাজ করেন তাঁর বাবা রবিউল্লাহ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে শরীর খারাপ লাগায় আমি আগে আগে বাড়ি চলে যাই। ভোরে এসে দেখি দোকানে নাসির নেই, কিন্তু দোকান খোলা। ক্যাশবাক্সে টাকা পড়ে আছে। পরে স্থানীয় লোকজন নিয়ে ওর শরীরের টুকরো টুকরো অংশ মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গা থেকে কুড়িয়ে নিই। কারও সঙ্গে আমাদের শত্রুতা ছিল না। কারা এই কাজ করল, আমি জানি না। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল ফয়সল বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, নাছিরকে কুপিয়ে টুকরো টুকরো করে মহাসড়কে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর লাশের বিভিন্ন অংশ যানবাহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে যায়। দোকানে রক্তের ছোপ পাওয়া যাওয়ায় মনে হচ্ছে, দোকানেই তাঁকে হত্যার পর লাশ মহাসড়কে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

কুমিল্লার জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এটি বীভত্স হত্যাকাণ্ড। কারা, কেন নাছিরকে হত্যা করল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।