পাঁচ আসামির বয়স নির্ধারণে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার পাঁচ আসামির বয়স নির্ধারণে স্বাস্থ্য পরীক্ষার আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আজ সোমবার বরগুনার শিশু আদালতে ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রাষ্ট্রপক্ষ এই আবেদন করে। এই আবেদনর ওপর ১৬ জানুয়ারি শুনানি হবে।

পুলিশের অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে প্রথম দিন সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও নিহত রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ।

রিফাত হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মজিবুল হক বলেন, এই মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির মধ্যে পাঁচ আসামির বয়স ১৮ বছরের বেশি মনে হচ্ছে। কিন্তু পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্রে তাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক দেখানো হয়েছে। তাই রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে বয়স যাচাইয়ের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন। ১৬ জানুয়ারি এ আবেদনের ওপর শুনানি হবে আদালত তারিখ ধার্য করেছেন।


আইনজীবী মজিবুল হক বলেন, আবদুল হালিম তাঁর সাক্ষ্যে ছেলে হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন। আসামিপক্ষের ১০ আইনজীবী তাঁকে জেরা করেন।

সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমানের আদালতে সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা। সাক্ষ্য গ্রহণ উপলক্ষে বরগুনা কারাগারে থাকা এ মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১১ আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। পাশাপাশি আদালতে উপস্থিত হয় জামিনে থাকা এ মামলার অন্য তিন অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি।

সাক্ষ্য দেওয়া শেষে নিহত রিফাতের বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ছেলে হত্যার বর্ণনা আদালতে সঠিকভাবে উপস্থাপন করেছি। আমার বিশ্বাস, আমার ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার পাব। আমার একমাত্র ছেলে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযুক্তরা যে যে ধরনের অপরাধ করেছে, তারা সেই ধরনের অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি পাবে।’

বরগুনা শিশু আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রিফাত হত্যা মামলার পাঁচ অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামির বয়স নির্ধারণে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছি। ১৬ জানুয়ারি এই আবেদনের ওপর শুনানি হবে।’

গত বছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। ওই দিন বিকেলেই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। পরদিন ২৭ জুন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মুসা এখনো পলাতক। এ ছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা ও অপ্রাপ্তবয়স্ক তিন আসামি জামিনে রয়েছেন। বাকি আসামিদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্করা কারাগারে ও অপ্রাপ্তবয়স্করা যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আছেন। সাক্ষ্য গ্রহণের দিন থাকায় অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের সেখান থেকে বরগুনা জেলা কারাগারের শিশু ওয়ার্ডে আনা হয়।