১১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় বাংলাদেশ বিমানের সাবেক ও বর্তমান ১০ কর্মকর্তার জামিন

১১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বাংলাদেশ বিমানের সাবেক ও বর্তমান ১০ কর্মকর্তা জামিন পেয়েছেন। ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েস আজ সোমবার তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কার্গো শাখা থেকে প্রায় ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার ১০ আসামি সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। দুদকের পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন তিনি। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ওই ১০ কর্মকর্তার জামিন মঞ্জুর করেন।

মাহমুদ হোসেন জানান, এর আগে এই মামলার দুজন আসামি গত ৩ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন। এরপর ১৭ ডিসেম্বর ওই দুই আসামি আদালত থেকে জামিন পান। এ নিয়ে এই মামলার মোট ১৬ আসামির মধ্যে ১২ আসামি জামিন পেয়েছেন। পলাতক আছেন বাকি চার আসামি।

জামিন পাওয়া ১২ আসামি হলেন বাংলাদেশ বিমানের সাবেক পরিচালক আলী আহসান, কার্গো শাখার সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ইফতেখার হোসেন চৌধুরী, কার্গো আমদানি শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক মো. ফজলুল হক, সাবেক সহকারী ব্যবস্থাপক মো. লুতফে জামাল, মোশাররফ হোসেন তালুকদার, রাজীব হাসান, নাসির উদ্দীন তালুকদার, কে এন আলম, সৈয়দ আহমেদ পাটওয়ারী, মনির আহমেদ মজুমদার, এ কে এম মনজুরুল হক ও মো. শাহজাহান।

আর পলাতক চার আসামি হলেন বিমানে কর্মরত কার্গো শাখার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক মো. আরিফ উল্লাহ, সাবেক সহকারী ব্যবস্থাপক ও বর্তমানে সৌদি আরবের দাম্মামে কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত মো. শহিদুল ইসলাম, সৌদি আরবের রিয়াদে রিজিওনাল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আমিনুল হক ভূঁইয়া ও সহকারী ব্যবস্থাপক অনুপ কুমার বড়ুয়া।

গত ৩ ডিসেম্বর দুদকের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, কার্গো শাখায় ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় কার্গো শাখার তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ছিলেন মো. আলী আহসান। বিমানের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায় এই অর্থ লোপাটের ঘটনা উদ্‌ঘাটন হওয়ার পর ২০১৭ সালের এপ্রিলে মো. আলী আহসানকে এই শাখা থেকে বদলি করে আরও বড় পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়। করা হয় বিক্রয় ও বিপণন শাখার পরিচালক।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ছয় বছরে অনির্ধারিত মালবাহী ফ্লাইটে (নন শিডিউল ফ্রেইটার) আসা এবং বিদেশে যাওয়া মালামাল থেকে আদায়যোগ্য মাশুল ১ কোটি ৫০ লাখ ৯৩ হাজার মার্কিন ডলার (১১৮ কোটি টাকার বেশি) বিমানের কোষাগারে জমা পড়েনি। আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে সরকারের ওই পরিমাণ অর্থ আদায় না করে বিমান তথা সরকারের ক্ষতিসাধন করেন।