ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় না, অথচ আসন খালি থাকে: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ট্রেনে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ট্রেনে টিকিট কাটতে গেলে টিকিট পাওয়া যায় না। অনেকে টিকিট না কেটে ভ্রমণ করেন। আবার ট্রেনে আসন খালি থাকছে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানার এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রাজ্জাক এসব কথা বলেন। রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলামের অনুপস্থিতিতে তাঁর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী অধিবেশনে প্রশ্নের জবাব দেন।

রুমিন ফারহানা তাঁর প্রশ্নে জানতে চান, বেসরকারি খাতে রেলওয়ে লাভ করলেও সরকারি খাতে লোকসান গুনছে কেন, রেলওয়েকে বেসরকারি খাতে দেওয়া হবে কি না? জবাবে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রেলওয়েতে যে অনিয়ম–দুর্নীতি, তা দীর্ঘকালের। বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকার এই খাত বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তা করেছিল।

মন্ত্রী বলেন, অনেক শিল্পকারখানা বেসরকারি খাতে দেওয়া হয়েছিল। পাবলিক সেক্টরে অনেক শিল্পকারখানাই লাভ করছে না। ফলে ধীরে ধীরে এগুলো বেসরকারি খাতে দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও খুব ভালো ফল আসেনি। আবার কিছু ক্ষেত্রে ভালো ফল এসেছে।

মন্ত্রী বলেন, রেলকে বেসরকারি খাতে দেওয়ার চিন্তা খারাপ না। তবে বেসরকারি খাতে দিতে হলে আগে দু-একটি লাইন দিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে হবে।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

সম্পূরক প্রশ্নে বিএনপির আরেক সাংসদ হারুনুর রশীদ রেলওয়ের অব্যবহৃত ভূমি খাস খতিয়ানভুক্ত করে বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করেন এবং মন্ত্রী বিষয়টি মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা করবেন কি না, জানতে চান।

জবাবে আব্দুর রাজ্জাক বিএনপি সাংসদের ওই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তিনিও এ বিষয়ে একমত। বিষয়টি তিনি মন্ত্রিসভায় তুলবেন।

বিএনপির সাংসদকে উদ্দেশ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আপনারা ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করলেন। এবারও নির্বাচনের পর সংসদে আসা নিয়ে অনেক কিছু দেখলাম। আপনারা সংসদে এসে এ ধরনের ভালো প্রস্তাব দিলে জাতিও উপকৃত হতো। আপনাদেরও জনপ্রিয়তা বাড়ত।’

সরকারি দলের সাংসদ মো. মোজাফ্‌ফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে রেলপথমন্ত্রীর পক্ষে জানানো হয়, ১৯৭২ সালে রেলওয়ের ভূমি ছিল ৬০ হাজার ৪০৫ দশমিক ৮৫ একর। বর্তমানে ভূমির পরিমাণ ৬১ হাজার ৮২০ দশমিক ৩৫ একর। এর মধ্যে রেলওয়ের ৫৮ হাজার ৬০৬ দশমিক ৫৭ একর ভূমি দখলে রয়েছে। ভূমি লিজ দিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৫৯ কোটি ৩৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৯০ টাকা আয় হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা ও লিজ গ্রহণকারীর কাছে রেলের বকেয়া ১২৪ কোটি ৪৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৯৬ টাকা।

সংরক্ষিত আসনের সাংসদ গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারের প্রশ্নের জবাবে রেলপথমন্ত্রী জানান, ২০১৯ সালে রেলের ৪৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ১৪১ জন আহত হয়েছেন।

সংরক্ষিত আসনের শামসুন নাহারের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ে ১ হাজার ৪৮টি রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫৯ জন নিহত ও ৪৩৩ জন আহত হয়েছেন।

৬৭৫ কোটি টাকার পাটপণ্য অবিক্রীত
নোয়াখালী-২ আসনের সাংসদ মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী জানান, কয়েক বছর যাবৎ অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাজারে পাটপণ্যের চাহিদা কম থাকায় বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) নিয়ন্ত্রিত পাটকলগুলোর ৬৭৫ কোটি টাকার পাটপণ্য অবিক্রীত রয়েছে।

গোলাম দস্তগীর গাজীর অনুপস্থিতিতে তাঁর পক্ষে প্রশ্নের জবাব দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

সরকারি দলের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, গত ১০ বছরে কাঁচা পাট রপ্তানির পরিমাণ অর্ধেকের বেশি কমেছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১৭ লাখ ৫০ হাজার বেল কাঁচা পাট রপ্তানি হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ৮ লাখ ২৫ হাজার বেল। গত ১০ বছর আগের তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ ৯ লাখ ২৫ হাজার বেল কমেছে।