ঘুষের দায়ে চাকরিচ্যুত, এরপর ছিনতাই-প্রতারণায় তিনি

গ্রেপ্তার ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ আজাদ (ডানে) পাশে তাঁর গাড়ির চালক রুবেল। ছবি: ইউএনবি
গ্রেপ্তার ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ আজাদ (ডানে) পাশে তাঁর গাড়ির চালক রুবেল। ছবি: ইউএনবি

পুলিশের ডিআইজি ও এসপি পরিচয় দিয়ে মানুষকে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ আজাদ নামের এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাকই দক্ষিণ ইউনিয়নের বাকই গ্রামে। বিকেল তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

আজ মঙ্গলবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম। সেখানেই তিনি ফখরুদ্দিনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানান।

জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ১৯৯১ সালে ফখরুদ্দিন মো. আজাদ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পদে যোগ দেন। কিন্তু ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে চাকরি হারান। ২০০০ সালে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন। এর কিছুদিন পর ছাড়া পেয়ে প্রতারণা শুরু করেন। গত কয়েক দিনে তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ১১ জন ব্যক্তি বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আনেন। পুলিশ এসব অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পায়। গতকাল সোমবার তাঁকে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার সি ব্লকের একটি বাসা থেকে প্রাইভেটকারসহ আটক করা হয়। এ সময় তাঁর গাড়িচালক মো. রুবেলকেও আটক করা হয়। আজ তাঁকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ সুপার বলেন, আজাদ একজন ভয়ানক প্রতারক। পুলিশের ডিআইজি-এসপি পরিচয় দিয়ে পুলিশের চাকরি দেওয়া, বদলিসহ নানা ধরনের চাকরি দেওয়ার নাম করে বিভিন্নজনের কাছ থেকে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর তিনি বাড়ি–গাড়ির মালিকও বনে যান। রাজধানীতে তিনি ফ্ল্যাটবাড়িতে বসবাস করেন। সম্প্রতি কুমিল্লায় পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ১১ জনের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তাঁর কাছ থেকে পুলিশের স্টিকারসংবলিত গাড়ি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের র‌্যাংক ব্যাজ, সিলসহ নানা ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। কুমিল্লার বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়েও প্রতারণা করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতারণার শিকার ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজা, মো. আজম, আনোয়ার হোসেন, শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ কয়েকজন বক্তব্য দেন।

ব্যাংকার মো. রেজা বলেন, তাঁর প্রাইভেটকারটি হাতিয়ে নেন আজাদ। আনোয়ার হোসেন নামের একজন বলেন, তাঁর দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ আজাদ বলেন, ‘১৯৯১ সালে শিক্ষানবিশ এসআই থাকাকালে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের কারণে আমার চাকরি চলে যায়। ২০০০ সালে ঢাকায় ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পড়ে সাত মাস জেলে ছিলাম। হতাশা থেকে এই কাজ করেছি।’