এসপি পরিচয়ে প্রতারণা: তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ

ভুয়া পুলিশ সুপার (এসপি) পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা ও মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বাড্ডা থানার পুলিশ। আজ মঙ্গলবার ওই তিন আসামিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। পরে আদালত শুনানি নিয়ে প্রত্যেকের এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তিন আসামি হলেন মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানার কান্দিপাড়া গ্রামের যুবরাজ হোসেন (৬২), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুলতানপুর থানার রাধিকা গ্রামের ইকবাল মাহমুদ (৪৬) এবং শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থানার মহিষকান্দি গ্রামের আবদুর রাজ্জাক সিকদার (৬১)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি যুবরাজ হোসেন নিজেকে পুলিশ সুপার পরিচয় দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। কেন এবং কী কারণে আসামিরা ভুয়া পরিচয় দিয়ে টাকা ও মোবাইল হাতিয়ে নিয়েছেন, তা তদন্ত করে বের করা হচ্ছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ অনুযায়ী, মামলার বাদীর নাম মাজেদুল ইসলাম। পেশায় তিনি একজন ট্রাকচালক। লালমনিরহাট থেকে ট্রাকে করে গত ৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় পাথর নিয়ে ঢাকায় আসেন মাজেদুল। কিন্তু বাড্ডার আফতাবনগরের লোহার সেতুর কাছে ট্রাকের চাকা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পাথর ট্রাক থেকে নামাতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ১০ নভেম্বর সকালে ট্রাক থেকে পাথর নামান। দিনের বেলা ঢাকার ভেতর ট্রাক চলাচলে নিষেধ থাকায় রাত হওয়ার জন্য আফতাবনগরেই অপেক্ষা করতে থাকেন। তখন একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকার ট্রাকটির কাছে আসে। প্রাইভেটকার থেকে নেমে আবদুর রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তি মাজেদুলকে প্রস্তাব দেন, তাঁর বস পুলিশ সুপার। প্রাইভেট কারে বসে আছেন। ঢাকা থেকে এসপির বাসার মালামাল নিয়ে যেতে হবে রংপুরে। চালক মাজেদুল রংপুরে যেতে রাজি হন। ভাড়া ঠিক হয় ২০ হাজার টাকায়। রামপুরা এলাকায় বাসার মালামাল দেখার জন্য চালকের সহকারী জাহাঙ্গীরকে সঙ্গে নিয়ে যান আবদুর রাজ্জাক। তখন কৌশলে জাহাঙ্গীরের মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেন রাজ্জাক। পরে আবার ফিরে এসে মাজেদুলকে বলেন, তাঁদের এখন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দরকার। বাসায় ফিরে সব টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। মাজেদুল সরল বিশ্বাসে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে দেন। টাকা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে উঠে পালিয়ে যান রাজ্জাক। অভিযোগ করার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। মামলার আলামত হিসেবে প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভুয়া এসপির পরিচয় দেওয়া যুবরাজের নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। বাকিদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।