কালুরঘাট সেতু দৃশ্যমান করাই হবে প্রথম কাজ : মোছলেম
১৯৭৩ সালের পর এই প্রথম চট্টগ্রাম–৮ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জিতেছিলেন। মাঝখানে কেটে গেছে ৪৭ বছর। ওই আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিনিধি ছিল না। এবারের উপনির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ। স্বাভাবিকভাবে দলীয় নেতা–কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই। নতুন সাংসদের কাছে তাঁদের প্রত্যাশাও অনেক বেড়ে গেছে। মোছলেম উদ্দিন আহমদ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। পাকিস্তান আমলে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। রাজনীতি করার সুবাদে বঙ্গবন্ধুরও কাছাকাছি পৌঁছতে পেরেছিলেন তিনি।
প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ কখনো সংসদে যেতে পারেননি। যদিও এর আগে দুটি নির্বাচনে হেরেছিলেন। বোয়ালখালীর সন্তান হওয়ার পরও তাঁকে পার্শ্ববর্তী এলাকা পটিয়ায় আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল।
সোমবারের উপনির্বাচনে জয় পাওয়ার পর দলীয় নেতা–কর্মীরা তাঁকে শুভেচ্ছো জানাচ্ছেন। জয় পাওয়ার এক দিন পর গতকাল মঙ্গলবার মোছলেম উদ্দিন আহমদ গতকাল প্রথম আলোর সঙ্গে তাঁর পরিকল্পনা এবং ভবিষ্যত কর্মসূচি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।
৪৭ বছর পর বোয়ালখালী–চান্দগাঁও আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয় পাওয়া এবং এই মুহূর্তে তাঁর অগ্রাধিকার কী জানতে চাইলে মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কালুরঘাটে নতুন সেতু নির্মাণকাজ দৃশ্যমান করা আমার নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারের এই মেয়াদেই সেতু হবে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু দৃশ্যমান করা আমার প্রধান অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে।’
নির্বাচনী মাঠে এক বছরের মধ্যে কালুরঘাটে নতুন সেতু দৃশ্যমান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোছলেম উদ্দিন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এক বছরের মধ্যেই সেতু দৃশ্যমান হবে বলে আমি আশাবাদী। কারণ, আমাদের নেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বলেন তা রক্ষা করেন। এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, কালুরঘাটে নতুন সেতু হবেই। মানুষের দুর্ভোগ আর থাকবে না।’
চট্টগ্রাম–৮ আসনের অন্তর্গত চান্দগাঁও অবহেলিত জনপদ হিসেবে পরিচিত। সেখানে জলাবদ্ধতা এবং ভাঙাচোরা সড়ক নাগরিক দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। এই এলাকায় কী উন্নয়ন করবেন বা কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী বরাদ্দ দিয়েছেন। সিডিএর মাধ্যমে সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছে। খাল এবং নালা খননের কাজ চলছে। তবে রাস্তাঘাটের অবস্থা একটু খারাপ। ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ির কারণে একটি বড় রাস্তার একাংশে দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি চলছে না। সিটি করপোরেশন রাস্তা মেরামত শুরু করেছে। আর কোনো নাগিরক দুর্ভোগ থাকলে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে আমি উন্নয়ন প্রকল্প নেব।’
নির্বাচিত হলে সবার জন্য দ্বার উন্মুক্ত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোছলেম উদ্দিন। এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারবেন কি না জানতে চাইলে মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘আমার দ্বার সবার জন্য উন্মুক্ত। আমি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়েছি। নির্বাচিত হওয়ার পর আমি এখন সবার এমপি। এলাকার উন্নয়নের জন্য আমি যে পদক্ষেপ নেব তার সুফল সবাই পাবে। কোনো সমস্যা হলে আওয়ামী লীগ ছাড়াও বিএনপি এবং বিভিন্ন দলের লোকজন আমার কাছে আসতে পারবেন। আমি সবার কথা শুনব।’