মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ২৩ জানুয়ারি

গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) শুনানিতে হাজির হয়েছিলেন মিয়ানমারের প্রতিনিধি অং সান সু চি। ছবি: রয়টার্স
গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) শুনানিতে হাজির হয়েছিলেন মিয়ানমারের প্রতিনিধি অং সান সু চি। ছবি: রয়টার্স

রোহিঙ্গা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ আগামী ২৩ জানুয়ারি। সোমবার গাম্বিয়ার বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের টুইটারে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।

গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারবিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু গত ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন তিনি। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হতে দীর্ঘ কয়েক বছর সময় প্রয়োজন। তাই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা ওই মামলায় গাম্বিয়া মূল বিচার শুরুর আগে অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপের জন্য আইসিজের কাছে আবেদন করে। এ বিষয়ে গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে শুনানি হয়। শুনানিতে গণহত্যা নিয়ে মিয়ানমার স্ববিরোধী সাফাই দেয়।

শুনানি শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে আইসিজে জানান, যথাযথ সময়ে একটি বৈঠকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপের নির্দেশনার আবেদনের বিষয়ে আইসিজে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

আইসিজেতে ওই তিন দিনের শুনানিতে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা গাম্বিয়ার আইনজীবীদের পাশাপাশি জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। মামলার গতি প্রক্রিয়া সম্পর্কে আইন বিশেষজ্ঞ ও আইসিজে কর্মকর্তাদের বিশ্লেষণ শোনেন। তাঁদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের একাধিক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক জানান, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়া ছয়টি অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়েছে। তবে এর সব পাওয়া যাবে কি না, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে রাখাইনের গণহত্যা নিয়ে মিয়ানমারের বক্তব্য যে স্ববিরোধী, সেটা সবার কাছে স্পষ্ট। অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপের ব্যাপারে আদালত খুব বেশি সময় নেবেন না।

গত সোমবার এই রায় ২৩ জানুয়ারি বলে জানায় গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে যে বর্বরতা চালানো হয়, তার মধ্য দিয়ে ১৯৮৪ সালের আন্তর্জাতিক গণহত্যা কনভেনশন ভঙ্গ করার অভিযোগ আনা হয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। ওই সময় হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা।

আরও পড়ুন: 
শান্তি প্রাসাদে শান্তির জন্য আইনি লড়াই
গাম্বিয়াই শেষ পর্যন্ত মিয়ানমারকে আদালতে নিয়েছে
ছোট্ট দেশ গাম্বিয়ার বড় পদক্ষেপ
রোহিঙ্গা গণহত্যায় নিজেদের সাফাই গাইছে মিয়ানমার
লজ্জায় ফেলে দিলেন গাম্বিয়ার আবুবকর
মিয়ানমারের গণহত্যার সাফাই স্ববিরোধী
রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় ছয়টি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা চায় গাম্বিয়া
মিয়ানমারের বক্তব্যকে ‘ফ্রড’ বলল গাম্বিয়া
সু চি ‘মিথ্যুক’, বললেন রোহিঙ্গারা