চট্টগ্রামে বহুমুখী প্রতিষ্ঠানে অভিযান, ৮ কোটি টাকা জব্দ

চট্টগ্রামে একটি বহুমুখী প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৮ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ছবি: ইউএনবির সৌজন্যে
চট্টগ্রামে একটি বহুমুখী প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৮ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ছবি: ইউএনবির সৌজন্যে

চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেডে ‘রূপসা কিং গ্রুপ’ নামের একটি বহুমুখী (মাল্টিপারপাস) প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৮ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করেছে ঢাকা থেকে যাওয়া পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল। একই সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত ইপিজেডে চৌধুরী মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে ডিবি। তাদের সহযোগিতা করে চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার পুলিশ।

গ্রেপ্তার তিন কর্মকর্তা হলেন মুছা হাওলাদার, রাসেল হাওলাদার ও গোলাম ফয়সাল। এদিকে অভিযানের খবর পেয়ে গতকাল রাতেই গ্রাহকেরা প্রতিষ্ঠানের সামনে জড়ো হন। তাঁরা তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান।

ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৭ সালে ঢাকার ফকিরাপুলে রূপসা কিং গ্রুপ নামে একটি সমবায় ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান চালু হয়। সাত মাস পর প্রতিষ্ঠানটি হাওয়া হয়ে যায়। টাকা হারানো গ্রাহকেরা সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ ডিবির কাছে অভিযোগ জানান। গ্রাহকদের বেশির ভাগই পোশাকশ্রমিক ও নিম্নমধ্যবিত্ত আয়ের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ডিবির একটি দল চট্টগ্রামের ইপিজেডে প্রতিষ্ঠানটির খোঁজ পেয়ে অভিযান শুরু করে। রূপসা কিং গ্রুপ নামের ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। অভিযানে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৮ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

ইপিজেড মোড়ে চৌধুরী মার্কেটের ওই কার্যালয়ে অভিযান চালানোর সময় প্রতিষ্ঠানটির কয়েক হাজার গ্রাহক ওই এলাকা ঘেরাও করে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং নিজেদের জমা টাকা ফেরত চান। অর্থ জমা রাখা গ্রাহকদের মধ্যে বড় একটা অংশই নারী শ্রমিক। সেলিনা আক্তার নামের এক পোশাকশ্রমিক সাংবাদিকদের বলেন, মাসিক কিস্তিতে ৭০ হাজার টাকা জমা রেখেছেন। লাভ তো দূরের কথা, পারিবারিক প্রয়োজনে টাকাগুলো ফেরত চেয়েও পাননি তিনি। মোকারম হোসেন নামের আরেক পোশাকশ্রমিক জানান, তাঁর ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা হলেও তিনি টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রেপ্তার মুছা হাওলাদারসহ রূপসা কিং গ্রুপের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ইপিজেড কলসিদিঘির পাড় এলাকায় দুটি বহুতল ভবন রয়েছে। এ ছাড়া নগরের পতেঙ্গা এলাকায় জমিও কিনেছেন। মূলত গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া টাকা দিয়েই তাঁরা এসব করেছেন।

ওসি মীর নুরুল হুদা বলেন, জব্দ করা টাকা ইপিজেড থানার পুলিশের জিম্মায় দিয়ে গেছে ডিবি। গ্রেপ্তার তিন আসামিকে আজ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।