মামলা নিয়ে ভীত নই: ইশরাক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। ফাইল ছবি
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। ফাইল ছবি

দুদকের করা দুর্নীতির মামলায় অভিযোগ গঠনের পর বিচার শুরু হওয়া প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন, গত জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর এই মামলা নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হয়েছে। এগুলো নিয়ে তিনি ভীত নন।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় নির্বাচনী জনসংযোগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন ইশরাক হোসেন। তিনি অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম আজ বুধবার ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার আদেশ দেন। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। অভিযোগ গঠনের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ইশরাক হোসেন। তাঁর আইনজীবী মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। বিচারক সেই আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। এ সময় তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার দাবি করেন।

ইশরাক বলেন, ‘গত জাতীয় নির্বাচনের সময় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর এই মামলা নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হয়েছে। এগুলো নিয়ে আমরা ভীত নই। রাজনীতি করব, জেল হবে না মামলা হবে না, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা হয় নাকি?’

আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইশরাক বলেন, ‘মামলা তো হয়েছেই রাজনৈতিক অভিসন্ধি থেকে। ২০০৮ সালে আমাকে একটা নোটিশ দিয়েছিল। তখন আমি পড়ালেখার জন্য দেশের বাইরে ছিলাম। সেই মামলা আজকে এসে নাড়াচাড়া করছে। আমি বলব, এসব করে কোনো লাভ নেই। আমি বিন্দুমাত্র বিচলিত নই।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলা তো নতুন নয়। হলফনামায় আমি লিখে দিয়েছি এই মামলা আছে। সরকার দলীয় নেতাদের নামে দুদকের বহু মামলা ছিল। এটা লুকানোর কিছু নেই। আজকে সাধারণ হাজিরা ছিল। এটাকে বড় করে দেখার কিছু নেই।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, এক এগারোর সময় এমন মামলা সব দলের নেতা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নামে করা হয়েছিল। এই সরকার আসার পর তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের মামলাগুলো গায়েব করে দিয়েছে। আর বিএনপিরগুলো সচল রেখেছে।

সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন বলেন, ‘এরা আমাকে শিবির বানিয়েছে। আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। শুধুমাত্র মুখে দাঁড়ি রাখি বলে আর আল্লাহকে স্মরণ করি দেখে, কথা বলার আগে বিসমিল্লাহ, ইনশা আল্লাহ বলি দেখে আমাকে বলা হয় শিবির, জামায়াত।’

২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ইশরাক হোসেন এবং তাঁদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের সম্পদের বিবরণী দুদকে দাখিলের নোটিশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে সম্পদে হিসেব না দেওয়ায় ২০১০ সালের ২৯ আগস্ট রাজধানীর রমনা থানায় দুদক এ মামলা করে। এরপর ২০১৮ সালের ৬ ডিসেম্বর এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন। গত বছরের ৫ মে ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত। গত বছরের ৯ ডিসেম্বর ইশরাক হোসেন আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।