শিশু তোফাজ্জলকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়

সুনামগঞ্জে সাত বছর বয়সী মাদ্রাসাছাত্র তোফাজ্জল হোসেনকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এরপর তার একটি চোখ উপড়ে ফেলে বস্তাবন্দী করে লাশ একটি ঘরের পেছনে পুতে রাখা হয়।

তোফাজ্জল হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সারোয়ার হাবিব ওরফে রাসেল (২৫) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য দিয়েছেন বলে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। সারোয়ার হাবিব তোফাজ্জলের আত্মীয় এবং প্রতিবেশী। তিনি শিশুটিকে বালিশ চাপা দেন। তাঁর ঘরের পেছন থেকেই তোফাজ্জলের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

১১ জানুয়ারি সকালে জেলার তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামে সারোয়ার হাবিবদের ঘরের পেছন থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় শিশু তোফাজ্জলের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের মাথায় আঘাত ও একটি চোখ ওপড়ানো ছিল। এ ঘটনায় তাহিরপুর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে তোফাজ্জলের বাবা জুবায়ের হোসেন মামলা করেন। মামলায় পুলিশ তোফাজ্জলের দুই চাচা, এক ফুফুসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ১৩ জানুয়ারি আসামিদের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সারোয়ার হাবিব সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শুভদীপ পালের আদালতে ১৬৪ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। আজ আদালতে হাজির করা হয় অন্য ছয় আসামিকে। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠান।

মামলার তদন্তে যুক্ত থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সারোয়ার হাবিব আদালতে জানিয়েছেন ঘটনার দিন তাদের ঘরে তার খাটেই তোফাজ্জল শুয়ে ছিল। একপর্যায়ে সে ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য চিৎকার দিলে তাকে বালিচাপা দেন তিনি। এরপর দেখেন তোফাজ্জল মারা গেছে। তিনি তোফাজ্জলকে মারার জন্য বালিশ চাপা দেননি। কিন্তু এতে তার মৃত্যু হয়। পরে তার একটি চোখ উপড়ে ফেলে লাশ ঘরের পেছনে বস্তায় ভরে রাখা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৮ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে তোফাজ্জল হোসেন ঘর থেকে খেলতে বের হয়ে আর ফেরেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে লিখিতভাবে জানানো হয়। ১১ জানুয়ারি শনিবার ভোরে তার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৩ জানুয়ারি সারোয়ার হাবিবের ঘর তল্লাশি করে তোফাজ্জলের রক্তমাখা লুঙ্গি, বালিশের দুটি কাভারসহ কিছু আলামত জব্দ করা হয়। পুলিশ বলছে, পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।