মাছের মেলায় জামাইদের ভিড়

জামাই মেলায় মাছ তুলে ধরেছেন এক বিক্রেতা। গতকাল গাজীপুরের কালীগঞ্জের বিনিরাইল গ্রামে।  ছবি: প্রথম আলো
জামাই মেলায় মাছ তুলে ধরেছেন এক বিক্রেতা। গতকাল গাজীপুরের কালীগঞ্জের বিনিরাইল গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

বড় একটি বাগাড় মাছ কিনতে সবাই দাম হাঁকছেন। বিক্রেতা দাম হেঁকেছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ক্রেতাদের মধ্যে আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া নামের এক জামাই মাছটির দাম সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা বলছেন। কিন্তু বিক্রেতা ছাড়ছেন না। চলছে দর-কষাকষি। যত না ক্রেতা, তার চেয়ে অনেক বেশি উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন মাছটি দেখার জন্য।

গতকাল বুধবার মাঘ মাসের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর, বক্তারপুর ও জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের মধ্যে বিনিরাইল গ্রামে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলায় গিয়ে এই দৃশ্য চোখে পড়ে। বর্তমানে এটি মাছের মেলা হিসেবে পরিচিত হলেও এটি দীর্ঘদিন ধরে ‘জামাই মেলা’ হিসেবেই পরিচিত। দিনটিকে ঘিরেই এখানে দিনব্যাপী চলে নানা রকম আনন্দ-উৎসব।

এলাকাবাসী ও মেলার আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এটা জামাই মেলা হলেও এখানে বসে মাছের বিরাট মেলা। বিনিরাইল এবং এর আশপাশের গ্রামে যাঁরা বিয়ে করেছেন, সেই জামাইরা হচ্ছেন ওই মেলার মূল ক্রেতা ও দর্শনার্থী। তা ছাড়া এই মেলাকে ঘিরে এলাকার জামাইদের মধ্যে চলে এক নীরব প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতাটি হলো, কোন জামাই সবচেয়ে বড় মাছটি কিনে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যেতে পারেন। 

উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন তো এসেছেনই, এর বাইরে থেকেও অনেকে এসেছেন উপজেলার সর্ববৃহৎ এই মাছের মেলায়। গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে অনেক মানুষ মেলা উপলক্ষে কালীগঞ্জে যান। প্রতিবছর পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষে হয় এ মেলা। এবারের মেলায় পাঁচ শতাধিক মাছ ব্যবসায়ী বাহারি মাছের পসরা সাজিয়ে বসেন। মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম জানান, ব্রিটিশ শাসনামল থেকে শুরু হওয়া বিনিরাইলের মাছের মেলা এখন ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। এলাকার জামাই আবু বকর সিদ্দীক বলেন, শ্বশুরবাড়িতে মাছ নিয়ে যাওয়া বলে কথা।