ভৈরবে কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় গতকাল বুধবার গভীর রাতে এক কিশোরী (১৩) গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে বাসে করে টঙ্গী থেকে ভৈরবে আসছিল।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভৈরব রেলওয়ে থানায় গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্য, মেয়েটির বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বোয়ালি গ্রামে। খালা থাকেন গাজীপুরের টঙ্গীতে। বেশ কয়েক বছর ধরে মেয়েটি খালার বাড়িতে থাকে। টঙ্গী থেকে সুনামগঞ্জের সরাসরি বাস নেই। ফলে গ্রামের বাড়ি যেতে হলে মেয়েটিকে প্রথমে বাসে করে ভৈরবে আসতে হয়। পরে ভৈরব থেকে সুনামগঞ্জের বাসে যেতে হয়। গতকাল সন্ধ্যায় মেয়েটি টঙ্গী থেকে বাসে ওঠে। ভৈরবে নামে রাত নয়টার দিকে। বাস থেকে নেমেই ব্যাটারিচালিত এক ইজিবাইকচালকের কাছে সুনামগঞ্জের বাসের বিষয়ে জানতে চায়। চিনিয়ে দেবেন বলে চালক তাকে ইজিবাইকে উঠতে বলেন। মেয়েটি ওঠার পর আরও দুজন যুবক ওঠেন। ইজিবাইকটি পৌর শহরের জগন্নাথপুর এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথ এবং কিছুটা দূরে স্টেশন। কিছুক্ষণ পর চালক ও দুই যুবকের সঙ্গে আরেক যুবক এসে যোগ দেন। পরে রেললাইনের পাশের নির্জন জায়গায় নিয়ে চারজন মিলে তাকে ধর্ষণ করেন।

মেয়েটির অভিযোগ, ধর্ষণ শেষে কয়েক ঘণ্টা মেয়েটিকে আটকে রাখা হয়। রাত দেড়টার দিকে তাকে স্টেশন এলাকার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। পথে কয়েকজনকে দেখে চারজন পালিয়ে যান। মেয়েটি পথচারীদের কাছে ঘটনাটি বলে। পথচারীরা তাকে রেলওয়ে পুলিশের কাছে নিয়ে যান।

রেলওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনাস্থল রেলওয়ে পুলিশের আওতাধীন নয়। সে জন্য মেয়েটিকে ভৈরব থানার পুলিশের কাছে পাঠানো হয়। ভৈরব থানার পুলিশও ঘটনাস্থল তাদের নয় বলে জানায়। পরে দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে মেয়েটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, মেয়েটির বাহ্যিক পরীক্ষা হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে বিকেলে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মেয়েটি বলে, ‘আমি একা ছিলাম। ভৈরব নামার পর কোন জায়গা থেকে সুনামগঞ্জের বাসে উঠতে হবে, সেটি বুঝতে পারছিলাম না। এক চালকের সাহায্য চাইতেই রাজি হয়ে গেল। চারজন আমাকে ধর্ষণ করে। বহু কান্নাকাটি করার চেষ্টা করেছি। পরে মুখে কাপড় গুঁজে দেয়। এরপর আর আমি শব্দ করতে পারিনি।’

খবর পেয়ে মেয়েটির খালা সকালে ভৈরবে আসেন। পরে তিনি নিজে বাদী হয়ে মামলা করেন।

ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস বলেন, ‘গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, ধর্ষণ করেন চারজন। আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। রেলওয়ে ঢাকা জোনের পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল্লাহ আল মামুন গণধর্ষণের খবর পেয়ে ভৈরবে গেছেন।’