পূজার দিনে নির্বাচন, সরকারকে দুষলেন ড. কামাল

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে শীর্ষ নেতারা। মতিঝিল, ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি। ছবি: আবদুস সালাম
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে শীর্ষ নেতারা। মতিঝিল, ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি। ছবি: আবদুস সালাম

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সরস্বতীপূজার দিনে নির্বাচন করা অন্যায় এবং এটা সরকারের গাফিলতি। এ ছাড়া ঢাকা সিটির নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে কামাল হোসেনের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে দেশব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব সরস্বতীপূজা। নির্বাচনের তারিখ পেছানোর জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরাও তারিখ পরিবর্তনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন। পূজার দিনে নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, ‘সরস্বতীপূজার দিনে নির্বাচন করা সরকারের অন্যায় কাজ হয়েছে। এটা কোনো দিন হয় নাকি? ঈদের দিন যদি একটা নির্বাচন হয়, পূজার দিনে হয়, এটা কি সরকারের একদম গাফিলতি এবং ব্যর্থতা না?’

আসন্ন ঢাকা সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করে কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচন পদ্ধতিকে ধ্বংস করা হয়েছে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র কল্পনা করা যায় না। গত জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, এই সিটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে না। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সরকারের বিপক্ষে রায় হবে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে পরিবর্তন আসবে।


এক লিখিত বক্তব্যে কামাল হোসেন বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচন উপলক্ষে ঐক্যফ্রন্ট ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দুটি করে চারটি পথসভা করবে। এই দেশের জনগণ নির্বাচনের পক্ষে। কারণ, এর মাধ্যমে জনগণ তার রাষ্ট্রের মালিকানা নিশ্চিত করতে পারে। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া এই মালিকানা নিশ্চিত হয় না।

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকারদলীয় প্রার্থী, মন্ত্রী, এমপিদের নির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ করে কামাল হোসেন বলেন, ঐক্যফ্রন্ট–সমর্থিত প্রার্থীদের নির্বাচনী গণসংযোগে বাধা এবং হামলা প্রমাণ করে, নির্বাচনে কোনো সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

দেশের অর্থনীতির অবস্থা প্রসঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক বলেন, অবস্থা এমন যে টাকা পরিশোধ করতে না পেরে নিজের কন্যাকে বাবা ধর্ষণের জন্য পাওনাদারের হাতে তুলে দিয়েছেন। সরকার যখন উন্নয়নের ঢোল পেটাচ্ছে, তখন মানুষের অভাব এবং অসহায়ত্ব কোন পর্যায়ে গেছে, এই ঘটনা তার উদাহরণ। শেয়ারবাজারকে ধ্বংস করা হয়েছে উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে পথে বসিয়ে সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। মানুষ আত্মহত্যা করেছে।

বৈঠকে কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি চিকিৎসক জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া, নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ চৌধুরী, সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের নুরুল আমিন ব্যাপারী প্রমুখ।