ঢাকা দক্ষিণে তিনটিতেই আ.লীগে 'বিদ্রোহী'

মোহাম্মদ সালেহিন, আনোয়ার পারভেজ, শহিদুল ইসলাম,  জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ হাসান, মোহাম্মদ ইলিয়াস
মোহাম্মদ সালেহিন, আনোয়ার পারভেজ, শহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ হাসান, মোহাম্মদ ইলিয়াস

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১৪ জন প্রার্থী। তিন ওয়ার্ডেই আছেন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী। তাঁদের অনেকে নিজেকে দল–সমর্থিত বলে দাবি করছেন। এ নিয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। এদিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে বিএনপির প্রার্থীরা। তাঁদের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই।

২৮ নম্বর ওয়ার্ড
কে বি রুদ্র রোড, উর্দু রোড, খাজে দেওয়ান প্রথম ও দ্বিতীয় লেন, আজগর লেন, চকসার্কুলার রোড, হরনাথ ঘোষ লেন, খাজে দল সিং লেন নিয়ে ২৮ নম্বর ওয়ার্ড।

ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী সাতজন। আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্রার্থীর বাইরে দলের আরও তিনজন নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন। আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন দলের কর্মী মোহাম্মদ সালেহিন। কাঁটাচামচ প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, ‘ওয়ার্ডে দলের কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। তাই স্বাধীনতার পর থেকে এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কেউ জিততে পারেননি। এবার আমার বিপরীতে আওয়ামী লীগের তিনজন বিদ্রোহী প্রার্থী। তাঁরা আমার প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন। তাঁরা আওয়ামী লীগ–সমর্থিত বলে ওয়ার্ডে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতে আমার নির্বাচনী প্রচারকাজে অনেক সমস্যা হচ্ছে।’

ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মী কামালউদ্দিন ওরফে কাবুল লড়ছেন মিষ্টিকুমড়া প্রতীকে। নির্বাচনী মাঠে আছেন তাঁর ছেলে ইব্রাহীম কামালও। তাঁর প্রতীক ঝুড়ি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কর্মী আবদুর রহিম নির্বাচন করছেন টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীক নিয়ে।

ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থন দিয়েছে দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার পারভেজকে। তাঁর প্রতীক ঠেলাগাড়ি। আনোয়ার পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ২০০২ সাল থেকে কাউন্সিলর। এবারও আশা করি নির্বাচিত হব। তবে আমাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। তারপরও এখন যতটুকু নির্বাচনী পরিবেশ আছে, তেমন যদি থাকে তাহলে আমি জয়ী হব।’

ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন আবদুল্লাহ মহসিন ও আশ্রাব উদ্দিন।

২৯ নম্বর ওয়ার্ড
ইসলামবাগ, শায়েস্তা খান রোড, রহমতগঞ্জ লেন, ওয়াটার ওয়ার্কস রোড, গনি মিঞার হাট, ফারিয়াপট্টি নিয়ে ২৯ নম্বর ওয়ার্ড।

ওয়ার্ডে ৪ জন কাউন্সিলর পদে লড়ছেন। আওয়ামী লীগ থেকে সমর্থন পেয়েছেন ২৯ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি ও বর্তমান কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ঠেলাগাড়ি প্রতীকে নির্বাচন করছেন। জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সড়ক সংস্কার, এলইডি বাতি স্থাপন, খেলার মাঠ ও পয়োনালা সংস্কারসহ অনেক কাজ করেছেন। এলাকার মাদক সমস্যা এখন অনেকটাই কেটে গেছে। আবার নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত কাজ শেষ করবেন। তিনি বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আমি জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী।’

>

ডিএসসিসির ওয়ার্ড ২৮, ২৯ ও ৩০
‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর কারণে বিপাকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা
সুবিধাজনক স্থানে বিএনপি

ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাবেদ হাসান। তিনি দলের চকবাজার থানা সভাপতি সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তাঁর প্রতীক ঘুড়ি।

ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী দলের চকবাজার থানার সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম। তিনি রেডিও প্রতীকে নির্বাচন করছেন।

ওয়ার্ডের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজিম উদ্দিন নির্বাচন করছেন ব্যাডমিন্টন র‍্যাকেট প্রতীকে।

৩০ নম্বর ওয়ার্ড
বড়কাটরা, ছোটকাটরা, দেবদাস ঘাট লেন, কমিটিগঞ্জ, চম্পাতলী লেন ও ইমামগঞ্জ নিয়ে ৩০ নম্বর ওয়ার্ড।

এবারের নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে তিনজন প্রার্থী লড়ছেন। বর্তমান কাউন্সিলর মোহাম্মদ হাসান আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্রার্থী। তাঁর প্রতীক মিষ্টিকুমড়া। মোহাম্মদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ২৮টি সড়কের সংস্কারকাজ করেছেন। পানি ও জলাবদ্ধতার সমস্যা অনেকটা দূর হয়েছে। ২০১৫ সালে তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল ওয়ার্ড থেকে মাদক দূর করার। এখন ওয়ার্ডে মাদক সমস্যা নেই।

ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ঢাকা-৭ আসনের সাংসদ হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম। তাঁর প্রতীক টিফিন ক্যারিয়ার।

ওয়ার্ডে বিএনপির সমর্থন পেয়েছেন ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস। ঘুড়ি প্রতীকের এই প্রার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রচারণার সময় শুরু হওয়ার পর থেকে নানাভাবে হুমকি পাচ্ছি। আমার সঙ্গে থাকা কর্মীদের ডেকে নিয়ে হামলা-মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে। নানাভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তবে নির্বাচনী পরিবেশ যদি সুষ্ঠু থাকে তাহলে আমি শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকব। আর জয়ের ব্যাপারে আমি খুবই আশাবাদী।’