প্রথম আলো সম্পাদকের অপরাধ তিনি কিছু লিখতেন: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের অপরাধ কী? অপরাধ যে মাঝেমধ্যে তিনি কিছু লিখতেন, তাঁর পত্রিকায় কিছু সত্য কথা বের হতো—এই জন্য একটি অবহেলাজনিত মৃত্যুর মামলার সঙ্গে তাঁকে জড়িয়ে দেওয়া হলো। প্রধান আসামি করা হলো। তাঁকেসহ প্রথম আলোর আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী তালুকদার মনিরুজ্জামান স্মরণ অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তালুকদার মনিরুজ্জামান নাগরিক স্মরণসভা কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।

রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম এ আদেশ দেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে আলোচনা হচ্ছে। খবরটি প্রকাশ করেছে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঠিক একইভাবে মাহমুদুর রহমান সাহেবকে, তাঁর পত্রিকা আমার দেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে দীর্ঘকাল কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছিল। যে ভিন্নমত পোষণ করতে চায়, ভিন্নকথা বলতে চায়, এখন তাকে নিশ্চিহ্ন করা, নির্মূল করা অথবা স্তব্ধ করে দেওয়ার কাজ চলছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এর মধ্যেই উঠে দাঁড়াতে হবে। এর মধ্যেই তো কথা বলতে হবে। তালুকদার মনিরুজ্জামান আমাদের সেই কথাই শিখিয়েছেন। তিনি শিখিয়েছেন লড়াই করে যাওয়া, সংগ্রাম করে যাওয়া, নিশ্চয় আমরা জয়ী হব। এ দেশের মানুষ সংগ্রাম করেই জয়ী হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। যাঁরা লিখছেন, কথা বলছেন, শুভ চিন্তা করছেন, সত্যকে সামনে নিয়ে আসছেন, সরকার তাঁদেরই নির্যাতন করছে, নিপীড়ন চালাচ্ছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, বাংলাদেশে আদর্শ শিক্ষক বলতে যা বোঝায়, তালুকদার মনিরুজ্জামান তা–ই ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার পথে দৌড়াননি। তিনি গবেষণা নিয়ে থাকতেন। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় তাকে অনুসরণ করা গেলে দেশে শিক্ষার মান উন্নত হতো।

আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাইয়িদ বলেন, রাষ্ট্র একটি ধ্বংসের উপত্যকার দিকে যাচ্ছে। এ রকম সময় তালুকদার মনিরুজ্জামানের চিন্তা ও লেখালেখির প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সি আর আবরার, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, তালুকদার মনিরুজ্জামানের ছেলে সাদিদ মুনির প্রমুখ।