ওত পেতে ছিনতাইকারী ধরলেন তরুণেরা

দৃশ্যপট কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর এলাকার কালিপুর ও পলতাকান্দা সংযোগ সেতু। পাড়ার একদল তরুণ গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে এক বাড়ির ছাদে অবস্থান নেন। উদ্দেশ্য ছিনতাইকারী ধরা। ভোরে রিকশায় করে বাড়ি ফিরছিলেন এক ব্যবসায়ী। এ সময় কয়েকজন ছিনতাইকারী রিকশার গতিরোধ করতেই তরুণেরা তাদের ঘিরে ফেলেন। পরে তরুণদের হাতে ধরা পড়ে চার ছিনতাইকারী।

তরুণদের হাতে আটক হওয়া চার ছিনতাইকারী হলেন পলতাকান্দা এলাকার আরিফ মিয়া (২৫), মো. আসিফ (১৯), নয়ন মিয়া (১৯) ও শহরের ঘোড়াকান্দার সিয়াম মিয়া (১৬)। তাঁদের কাছ থেকে চাপাতি, চাকু, রামদা ও সুইচ গিয়ার উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় লোকজন জানান, দেশের অন্যতম বড় নৈশ মৎস্য আড়তের অবস্থান ভৈরবের পলতাকান্দায়। পলতাকান্দা ও কালিপুর এলাকার অনেক লোক এই আড়তে ব্যবসা করেন। বিক্রি শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় সময়ই ভোর হয়ে যায়। ভোরে বাড়ি ফেরার সময় প্রায়ই মাছ ব্যবসায়ীরা পলতাকান্দা ও কালিপুর সংযোগ সেতুর কাছে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। শুধু ছিনতাই নয়, অনেক সময় ছুরিকাঘাত করে আহতও করা হয়। ছিনতাই রোধে প্রশাসনিক উদ্যোগ চলমান থাকলেও ছিনতাই থামানো যাচ্ছিল না। তাই ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে ওত পেতে ছিনতাইকারী ধরা হয়েছে। আটক করার পর পুলিশ চার ছিনতাইকারীকে বেঁধে রাখে। পরে পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়।

খবর পেয়ে থানায় ছুটে আসেন আটক আরিফের বাবা মিলু মিয়া। পুলিশের কাছে আকুতি জানিয়ে বলেন, আরিফ যেন জেল থেকে আর ছাড়া না পায়। কারণ জানতে চাইলে মিলু মিয়া বলেন, ‘আরিফ বাবা (ইয়াবা) খায়। চুরি–ছিনতাই করে। আমার কাছে টাকা চায়। না দিলে ছুরি ধরে। আর সহ্য হয় না।’ আটক চারজনই পুলিশ হেফাজতে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন, ইয়াবা সেবনের টাকা জোগাড় করতেই বেশির ভাগ সময় তাঁরা ছিনতাই করেন।

পলতাকান্দা ও কালিপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরেফিন জালাল প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ একা ছিনতাই বন্ধ করতে পারছে না। সে কারণে নিজেদের রক্ষার উপায় নিজেরাই বের করে নিচ্ছে।

ভৈরব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শ্যামল চন্দ্র নাথ প্রথম আলোকে বলেন, আটক চার ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলা গেলে কোনো চক্রই সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।