ঐক্যবদ্ধ হলে সিটি নির্বাচনে আ.লীগকে হারাতে পারব: মির্জা ফখরুল

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন, ১৯ জানুয়ারি, ঢাকা। ছবি: সাজিদ হোসেন
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন, ১৯ জানুয়ারি, ঢাকা। ছবি: সাজিদ হোসেন

বর্তমান সরকার বিভিন্ন কৌশলে বিএনপিকে পরাজিত করতে চায় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে ক্ষমতাসীনদের তাঁরা পরাজিত করতে পারবেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার অনেক কৌশলী। কৌশলে আমাদের বিভিন্নভাবে পরাজিত করতে চায়। আজকে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, মানুষকে সংগঠিত করতে পারি, তাহলে এই নির্বাচনে অবশ্যই আমরা ক্ষমতাসীন দলকে পরাজিত করতে পারব।’ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনকে (ইভিএম) সরকারের নতুন কৌশল উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে নির্বাচন করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ একটা জিনিস মনে রাখে না, তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়েছিল বলেই জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ইতিহাসকে বিকৃত করার কোনো সুযোগ নেই। এ সময় জিয়াউর রহমান আধুনিক রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বিভিন্ন ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমানের অবদান তুলে ধরেন।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসনব্যবস্থা করেছিল, বাকশাল করেছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের সুযোগ করে দেন। ২০০৮ সালে নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সুপরিকল্পিতভাবে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ভিন্ন আঙ্গিকে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে পরাজিত করতে হবে।

বিএনপির সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তা মোকাবিলা করার কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, তরুণদের দায়িত্ব অনেক। দেশকে এই অবস্থা থেকে মুক্ত করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে দুর্বার গণ–আন্দোলন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমান ক্রান্তিকালে মানুষকে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। জিয়াকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ইতিহাস বিকৃতি করছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকা জন্য ক্ষমতাসীনরা অপপ্রচার চালাচ্ছে।

যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলা যাবে না বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে জিয়ার নাম মুছে ফেলা হলেও মানুষের মন থেকে তা মোছা যাবে না। নিজেদের মধ্য বিভেদ থাকলে তা ভুলে গিয়ে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মাহবুব উল্লাহ জিয়াউর রহমানের বিভিন্ন কাজের প্রশংসা করেন। জিয়াউর রহমানকে টক শোসহ বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে ছোট করা হয় তা দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করে তিনি।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান প্রমুখ।