যেন পাখির রাজ্য

সন্ধ্যার আগে জলাশয়ের আশপাশের গাছে অবস্থান নিতে ছুটে আসে শত শত পাখি। গতকাল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কমপ্লেক্স ক্যাম্পাসে।  প্রথম আলো
সন্ধ্যার আগে জলাশয়ের আশপাশের গাছে অবস্থান নিতে ছুটে আসে শত শত পাখি। গতকাল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কমপ্লেক্স ক্যাম্পাসে। প্রথম আলো

জলাশয়ের ওপর দিয়ে এক ঝাঁক পাখি উড়ে গিয়ে বাদামগাছে বসে। চোখের সামনে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ছে শালিক। পাখির কিচিরমিচির ডাকে চারদিক মুখর। পাখির এই কলতান দেখতে দর্শনার্থীরা প্রায় আসেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের ক্যাম্পাসে। এখানকার পুকুর জলাশয় ও গাছে দেশি পাখির মেলা বসেছে। বেশির ভাগই শালিক। সব মিলিয়ে যেন এক পাখির রাজ্য গোটা উপজেলা ক্যাম্পাস। 

গতকাল রোববার বিকেলে দেখা গেছে, উপজেলা পরিষদে ক্যাম্পাসে শত শত পাখির মেলা। পাখি দেখতে এসেছেন বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী। তাঁদের মধ্যে একজন স্বপন কুমার জানালেন, এমন চোখজুড়ানো ছবি দেখে মন ভরে গেছে তাঁর। এখানে এসে মন ভালো হয়ে গেছে। কেবল স্বপন কুমার নন, তাঁর মতো আরও আট–দশ জন দর্শণার্থীও একই মন্তব্য করলেন।

জানা গেছে কয়েক বছর ধরে এলাকাটি নিরাপদ মনে করে বিভিন্ন পাখি আসতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে এসে জলাশয়ের চারপাশে বাদাম, ইউক্যালিপটাস ও নানা প্রজাতির গাছে বসতে থাকে শালিক, টিয়া, ঘুঘুসহ নানা জাতের পাখি। তবে শালিক ও কাকের সংখ্যাই বেশি। সারা দিন খাবারের জন্য বিচরণ করে সন্ধ্যার আগে নিরাপদ ঠিকানায় ফিরে আসে পাখিরা। জলাশয়ের আশপাশের গাছের ডালপালা-শাখা সর্বত্র এই পাখিদের বিচরণ।

কলেজশিক্ষার্থী মো. রাসেল প্রতিদিন সন্ধ্যায় পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনতে চলে আসেন। তিনি বলেন, পাখির অভয়াশ্রম দেখে অনেক গর্ব হয়। অনেক মানুষ এখানে আসে। এখানে পাখিকে কেউ বিরক্ত করে না। পাখির বিচরণ দেখে মন উৎফুল্ল হয়ে যায়।

এই এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন, ইলিয়াছ হোসেন ও উজ্জ্বল দে বলেন, পাখিরা জলাশয়ের আশপাশে গাছের ডালপালা, বাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বসে। গাছের ফল খেয়ে ফেলে। এরপরও এলাকার মানুষ এসব পাখিদের বিরক্ত করে না। পাখিরা এখানে খুব নিরাপদে আছে। এই এলাকাটি পাখির অভয়ারণ্য বলা চলে।

জানতে চাইলে বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় প্রথম আলোকে বলেন, ওই এলাকাটি পাখিরা নিরাপদ মনে করে তাই ওখানে আশ্রয় নেয়। সারা দিন খাবার খেয়ে সন্ধ্যার আগে পাখিগুলো ছুটে আসে। জলাশয়ের আশপাশ ও বাদামগাছে মূলত শালিক পাখি রাতে অবস্থান নেয়। কিছু কিছু কাকও দেখা যায়। 

ইউএনও মো. মাসুদূর রহমান বলেন, উপজেলা ক্যাম্পাসের জলাশয় ও গাছে সন্ধ্যায় ফিরে আসা পাখিগুলোকে কেউ বিরক্ত করে না। পাখিদের বিচরণ যাতে কোনোভাবে ব্যাহত না হয়, তা দেখা হচ্ছে।