৩২৯ টেকনিক্যাল স্কুল-কলেজ স্থাপনে সাড়ে ২০ হাজার কোটি টাকা

একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের সভায় ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এনইসি সম্মেলনকক্ষ, ঢাকা, ২১ জানুয়ারি। ছবি: পিআইডি
একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের সভায় ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এনইসি সম্মেলনকক্ষ, ঢাকা, ২১ জানুয়ারি। ছবি: পিআইডি

তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে দেশের উপজেলাগুলোয় ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনে প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ প্রকল্পের ব্যয় ২০ হাজার ৫২৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। ‘উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন (২য় পর্যায়)’সহ ৮টি প্রকল্প আজ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

একনেক সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের ১৭তম একনেক সভায় আজ ২২ হাজার ৯৪৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্প ব্যয়ের পুরো অর্থ বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ব্যয় করা হবে। ৮ প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন প্রকল্প এবং বাকি দুটি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি সরকারের একটি তারকা (স্টার) প্রকল্প। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে আমরা দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে কারিগরি শিক্ষা প্রদান এবং দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, বিদেশি শ্রমবাজারে যুবসমাজের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য দেশে বিভিন্ন ধরনের কারিগরি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালনার জন্য কারিগরি স্কুলের শিক্ষকদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

একনেকের সভায় ৩২৯ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এনইসি সম্মেলনকক্ষ, ঢাকা, ২১ জানুয়ারি। ছবি: পিআইডি
একনেকের সভায় ৩২৯ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এনইসি সম্মেলনকক্ষ, ঢাকা, ২১ জানুয়ারি। ছবি: পিআইডি

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কারিগরি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। শিক্ষকের অভাব আছে। প্রয়োজন হলে প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষকদের বিদেশ পাঠাতে হবে।’ এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন তৈরি এবং যন্ত্রপাতি, চেয়ার–টেবিলসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এম এ মান্নান বলেন, ‘আমরা নতুন কোনো সড়ক নির্মাণ করছি না। পুরোনো সড়কগুলো সংস্কার, সম্প্রসারণ এবং শক্তিশালী করব।’ প্রধানমন্ত্রী শিল্পপার্কগুলোয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিকে আরও শক্তিশালী এবং বর্জ্য শোধনাগার স্থাপনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার সতর্ক রয়েছে এবং আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চাই।’

একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো ‘সিরাজগঞ্জের বিসিক শিল্প পার্ক’ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯১ কোটি ১১ লাখ টাকা, এসআরডিআইয়ের ভবন নির্মাণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা, জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

এ ছাড়া কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকার নির্বাচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৯৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা, বেতগ্রামতুলা-পাইকগাছা-কয়রা সড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৩৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, লক্ষ্মীপুর শহর সংযোগ সড়ক ও লক্ষ্মীপুর-চর আলেকজান্ডার-সোনাপুর-মাইজদী সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।