অগ্রিম চেক নিয়ে গ্রাহকের টাকা ব্যাংক কর্মকর্তার পকেটে

দীর্ঘ ৭ বছর ৯ মাস ঢাকা ব্যাংকের ফেনী শাখায় কাজ করেছেন তিনি। এই সময়ে তিনি বেশ কিছু গ্রাহকের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং অনেকের বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। সেই সুযোগের অপব্যবহার করেছেন তিনি।

জানা গেছে, ব্যাংকের ঋণ শাখার ইনচার্জ ও ঋণপত্র (এলসি) খোলার দায়িত্বে থাকায় গ্রাহকদের বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি ও সংরক্ষণের দায়িত্বও পালন করতেন। ক্রেডিট অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দেশে বিদ্যমান ব্যাংক রীতি অনুযায়ী বিভিন্ন ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে প্রতিটি ঋণের বিপরীতে কিছু স্বাক্ষরিত অগ্রিম চেক কাগজপত্রের সঙ্গে সংরক্ষণ করতেন। গ্রাহকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় তিনি তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ঋণ হিসাব সমন্বয়ের কথা বলে ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে অগ্রিম চেক নিতেন। পরে তিনি তাঁর মেকার আইডি ব্যবহার করে যেসব গ্রাহকের চেক তাঁর কাছে ছিল, তাঁদের হিসাবে অন্য গ্রাহকের টাকা স্থানান্তর করে ৭ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেন।

ওই ব্যক্তির নাম গোলাম সাঈদ রাসেব। সাঈদকে অর্থ আত্মসাতে সহায়তা করেছেন ব্যাংকটির ক্যাশ ইনচার্জ মো. আব্দুস সামাদ ও হুন্ডি ব্যবসায়ী আজিম খন্দকার।

হুন্ডি ব্যবসায়ী আজিম খোন্দকারের মাধ্যমে রাসেব তাঁর ঢাকায় অবস্থানরত ভাই হোসেন মো. কাউছার ওরফে জাপানি কাউছারের ব্যাংক হিসেবে দেড় কোটি টাকা পাচার করেন। এ ছাড়া বেশ কিছু টাকা অন্যত্র পাচার করা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সংস্থাটির উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলায় অভিযোগপত্র দিচ্ছে দুদক।

৭ কোটি ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ১৯ মার্চ ঢাকা ব্যাংকের ফেনী শাখার ব্যবস্থাপক মো. আক্তার হোসেন সরকার ব্যাংকটির ক্রেডিট বিভাগের প্রিন্সিপাল অফিসার গোলাম সাঈদ রাসেব ও ক্যাশ অফিসার ইনচার্জ আবদুস সামাদকে আসামি করে ফেনী সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের জন্য দুদকে পাঠানো হয়।

তদন্তে নেমে গত ২ এপ্রিল ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম সৈয়দ রাসেবকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে দুদক। এরপর ১৫ ও ১৬ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয় অন্য দুজনকে।