চিত্রার পরিবারে নতুন অতিথি

চিত্রা হরিণের পালের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে সদ্য জন্ম নেওয়া শাবকটি। গতকাল দুপুরে সিলেটের টিলাগড় এলাকার চিড়িয়াখানায়। ছবি: প্রথম আলো
চিত্রা হরিণের পালের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে সদ্য জন্ম নেওয়া শাবকটি। গতকাল দুপুরে সিলেটের টিলাগড় এলাকার চিড়িয়াখানায়। ছবি: প্রথম আলো

সিলেট চিড়িয়াখানায় বসবাস করা চিত্রা হরিণগুলোর মধ্যে হঠাৎ করেই দেখা দিয়েছে অন্যরকম এক চাঞ্চল্য। কারণ, তাদের সংসারে এসেছে নতুন এক অতিথি। ৯ জনের সংসার এখন দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে আরও দুইটি মা হরিণ বাচ্চা দেবে বলে আশা করছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

গত শনিবার সকালে চিত্রা হরিণের পালে নতুন অতিথি দেখেছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট বনকর্মীদের ধারণা, শুক্রবার রাতেই বাচ্চা প্রসব করেছে একটি মা চিত্রা হরিণ। তবে গত দুই দিন প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে সদলবলে ছুটে ফিরছে চিত্রা হরিণের ছানাটি।

সিলেট নগরের টিলাগড় এলাকায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের এই চিড়িয়াখানায় চিত্রা হরিণের পালে আসা নতুন অতিথিকে বরণে চলছে নানা আয়োজন। কারণ, চিড়িয়াখানায় কোনো প্রাণীর বাচ্চা প্রসবের ঘটনা এই প্রথম।

গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, মা হরিণের সঙ্গে নির্বিঘ্নে বিচরণ করছে হরিণছানাটি। দর্শনার্থীদের মধ্যেও আছে কৌতূহল। চিত্রা হরিণের পালে নতুন অতিথি বরণ করতে চলছে নানা আয়োজন। চিড়িয়াখানার দায়িত্বে থাকা বনকর্মীরা জানান, হরিণের জন্য সংরক্ষিত স্থানগুলোর দিকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাচ্চা হরিণ যাতে ছোটাছুটি করে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে গিয়ে কোনো বিপদে না পড়ে, এ জন্য সীমানাপ্রাচীরও সংস্কার করা হচ্ছে।

বন বিভাগ জানায়, ১১২ একর আয়তনের এই ইকোপার্কে ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র চালুর সিদ্ধান্ত হয়। নির্মাণকাজ শেষ হলে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর প্রাণী আনা হয়। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে দুটি জেব্রা, তিনটি চিত্রা হরিণ, ১২টি ময়ূরসহ নানা রকম পাখি চিড়িয়াখানায় রাখা হয়। এরপর ওই বছরের ৩ নভেম্বর থেকে চিড়িয়াখানাটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

একদিন খাঁচা ছেড়ে বনে পালায় তিনটি চিত্রা হরিণ। পরে খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া গেলেও একটির শরীরে জখম মেলে। এ জখমে শেষ পর্যন্ত মারা যায় হরিণটি। এরপর গত বছরের ৩০ আগস্ট একসঙ্গে সাতটি চিত্রা হরিণ নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে তিনটি মা হরিণের মধ্যে একটি বাচ্চা দিয়েছে। আরও দুটি বাচ্চা দেবে চলতি সপ্তাহের মধ্যে।

টিলাগড় ইকোপার্কের দায়িত্বে থাকা বন কর্মকর্তা চয়নব্রত চৌধুরী জানান, সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এস এম সাজ্জাদ হোসেন চিড়িয়াখানার জন্য নয়টি হরিণ চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন রামসাগর জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষকে। সেখান থেকে সাতটি হরিণ নিয়ে আসা হয়েছিল। এ হিসাবে সাতটি, আর আগে থাকা দুইটি মিলিয়ে একটি বড় দল হয়। চিত্রা হরিণের দলটিই এখন চিড়িয়াখানায় বড় দল। আশা করছি, চলতি সপ্তাহে আরও দুটো হরিণ বাচ্চা দেবে।