চবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক উপপক্ষ সিএফসির নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত হন আরেক উপপক্ষ বিজয়ের কর্মী আবু বকর। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক উপপক্ষ সিএফসির নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত হন আরেক উপপক্ষ বিজয়ের কর্মী আবু বকর। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগের একটি উপপক্ষ। আজ বুধবার বিকেলে নিজেদের তিন কর্মীকে মারধরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় অবরোধের ডাক দেয় ছাত্রলীগের উপপক্ষ ‘বিজয়’। এ ঘটনার জেরে ক্যাম্পাসের সোহরাওয়ার্দী ও শাহ আমানত হলের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) নেতা-কর্মীরা।

মারামারিতে জড়িত সিএফসি ও বিজয় দুই উপপক্ষই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। বর্তমানে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং অন্যটি শিক্ষা উপমন্ত্রীর অনুসারী। এই দুই পক্ষের মধ্যে আরও ১১টি উপপক্ষ রয়েছে। গত পাঁচ বছরে এসব উপপক্ষের মধ্যে অসংখ্যবার সংঘর্ষ ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, আজ বিকেল চারটার দিকে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সিএফসির এক কর্মীকে মারধর করেন বিজয়ের কর্মীরা। এর জের ধরে বিকেল পাঁচটার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলে গিয়ে বিজয়ের তিন কর্মীকে মারধর করেন সিএফসির নেতা-কর্মীরা। ঘটনা জানাজানি হলে বিজয়ের নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হল এবং সিএফসির নেতা-কর্মীরা শাহ আমানত হলের সামনে জড়ো হন। এ সময় তাঁদের হাতে লোহার রড, লাঠিসোঁটা ও রামদা দেখা যায়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুই উপপক্ষই হলের সামনে অবস্থান করছে। এ ছাড়া আহত অবস্থায় আবু বকর নামের বিজয়ের এক কর্মীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ রিফাত রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মাঠে কথা-কাটাকাটির জের ধরে এ ঝামেলা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ সচেতন রয়েছে।

অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক

এদিকে বিজয়ের কর্মীদের মারধরের প্রতিবাদে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হকের পদত্যাগের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। অবরোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজয়ের নেতা ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অতর্কিতভাবে তাঁদের কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে সিএফসি। সিএফসির নেতা রেজাউল হকের নির্দেশে এই হামলা চালানো হয়। তাই রেজাউল হককে সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার ও হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে। তিনি বলেন, রেজাউল হকের বয়স ৩৩ বছর। তিনি অছাত্র। ফলে ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কোনো অধিকার রেজাউলের নেই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিজয়ের নেতা-কর্মীরা খেলার মাঠে সিএফসির কর্মীকে মারধর করেছেন। নাক ফাটিয়ে দিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে।