ভোলায় ডাকপিয়নের বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণের মামলা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভোলার সদর উপজেলায় এক ডাকপিয়নের বিরুদ্ধে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে (৮) ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে ঘটা ওই ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে থানায় মামলাটি করেন শিশুটির বাবা।

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম শের-ই আলী। পুলিশ এখনো তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। শিশুটি ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শের-ই আলী ভোলা সদরের একটি ইউনিয়নের স্থানীয় পোস্ট অফিসের ডাকপিয়ন। সোমবার বেলা ১১টার দিকে ওই শিশু হেঁটে স্কুলে যাচ্ছিল। পথে ওই ব্যক্তি তাকে জুস খাওয়ানোর কথা বলে পোস্ট অফিসের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। ওই সময় পোস্ট অফিসে কেউ ছিল না। চেতনানাশক দ্রব্য মেশানো জুস খাইয়ে শের-ই আলী শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। চেতনা ফিরলে শিশুটি কাঁদতে থাকে। তখন ওই ব্যক্তি তাকে মারধর করে হত্যার হুমকি-ধমকি দিয়ে স্কুলে পাঠিয়ে দেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঘটনাটি কাউকে বললে শিশুটিকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেন শের-ই আলী। আর না বললে নতুন জামা কিনে দেবেন বলে লোভ দেখান। বিকেলে ক্লাস শেষে বাড়ি ফেরার পথে শিশুটি মাথা ঘুরে রাস্তায় পড়ে যায়। পরে সহপাঠীরা ধরাধরি করে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়। পরে পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসার জবাবে সব ঘটনা জানায় সে।

ওই শিশুর মা-বাবা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় মাস্তান প্রকৃতির লোকজন সালিসের নাম করে তাঁদের ঘরে আটকে রাখে। পরে মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে গতকাল সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার সময় শের-ই আলীর পরিবারের লোকজন পথে বাধা দেয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভোলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. মেহেদী হাসান ভূঁইয়া বলেন, ওই শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের গাইনি বিভাগের জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স রেখা আক্তার বলেন, প্রাথমিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।

হাসপাতালের সিভিল সার্জন তৈয়বুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষা শেষ হয়েছে। শিশুর অবস্থা আগের থেকে ভালোর দিকে। সে চিকিৎসাধীন, শঙ্কামুক্ত। আদালত চাইলে তাঁরা প্রতিবেদন জমা দেবেন।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেই ঘটনাস্থল, হাসপাতাল পরিদর্শন করে শিশু ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। শিশুর বাবা বাদী হয়ে ডাকপিয়ন শের-ই আলীকে আসামি করে এজাহার (অভিযোগপত্র) জমা দিয়েছেন। গতকাল রাত সাড়ে নয়টায় মামলা হয়েছে। পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।’

এ ব্যাপারে শের-ই আলীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও, তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।