মুঠোফোনে প্রেমের এ কী করুণ পরিণতি

মুঠোফোনে প্রেম। এক মাস কথা-বার্তা বলার পর দুজন দেখা করার দিন ঠিক করেন। তাঁদের দেখাও হলো। তবে ওই নারীর এক পায়ে সমস্যা, তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। এমন পরিস্থিতিতে ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাননি পুরুষটি। কিন্তু বিয়ের জন্য জেদ ধরেন ওই নারী। শেষ পর্যন্ত তিনি গাইবান্ধা থেকে বগুড়ায় ওই ব্যক্তির বাড়িতে চলে যান। গিয়ে দেখেন, ওই ব্যক্তির ঘরে দুই স্ত্রী। স্বামীকে তৃতীয় বিয়ে করতে বাধা দেন তাঁরা। মধ্যরাতে বাড়ি থেকে ওই নারীকে বের করে দেওয়া হয়। তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। ওই নারীকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়।

জয়তারা বেগম ওরফে লিমাকে (২৮) হত্যার কথা স্বীকার করে গতকাল বুধবার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার রাখালগাছি গ্রামের হবিবর রহমান (৪০)। বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মোমিনের আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। হাবিবরের স্ত্রী শহিদা বেগম রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

জয়তারার বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায়। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তিনি বাবার বাড়িতে থাকতেন। তাঁর আট বছরের একটি সন্তান আছে।

বগুড়ার সোনাতলা থানা-পুলিশের ভাষ্য মতে, ১৮ জানুয়ারি বগুড়া সদর উপজেলার রাখালগাছি গ্রামের তালতলা মাঠের একটি খেত থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর (২৮) লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

সোনাতলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদ হোসেন মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, লাশটি জয়তারার বলে শনাক্ত করেন ভাই দুলু মিয়া। তিনি বাদী হয়ে ওই দিনই সোনাতলা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এরপর খুনিদের শনাক্ত করতে মাঠে নামে পুলিশ। জয়তারার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরে গত মঙ্গলবার রাতে সোনাতলা থেকে হবিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে হবিবর জানান যে তাঁরা দুজন ১৭ জানুয়ারি দেখা করার দিন ঠিক করেন। এরপর জয়তারা সাঘাটা থেকে ট্রেনে চড়ে সোনাতলা রেলস্টেশনে আসেন। সেখানে দুজনের দেখা হয়। ওই দিন তাঁকে হত্যা করা হয়।