চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, রিমান্ডে ৩০ আসামি

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার ৩০ আসামিকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত গতকাল বুধবার এই আদেশ দেন।

আজ বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাহিদ পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩০ জন এখন কারাগারে আছেন। আদালতের আদেশ হাতে পাওয়ার পর দু-এক দিনের মধ্যে আসামিদের কারাগার থেকে থানায় নিয়ে আসা হবে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পুরো ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করা হবে।’

গত মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার ১৩ নম্বর সেক্টরের শাহ মুখদুম অ্যাভিনিউ এলাকায় টুগেদার ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস নামের অফিস থেকে ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-৪। এ ঘটনায় আবুল কাশেম নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় ৩৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

মামলার এজাহারে কাশেম বলেন, তিনি বেকার যুবক। চাকরির জন্য পূর্বপরিচিত ইমদাদুল শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন ইমদাদুল তাঁকে জানান, টুগেদার ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস নামের প্রতিষ্ঠান লোক নিচ্ছে। চাকরিতে যোগ দেওয়ার শর্ত হলো, ৫০ হাজার টাকা জামানত দিতে হবে। শর্ত মোতাবেক তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার টাকা জামানত রাখেন। টাকা জমা দেওয়ার রসিদ চাইলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়, রসিদ লাগবে না। চাকরিতে যোগ দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে জামানতের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। ২ জানুয়ারি তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে যোগ দেন। পরে কোম্পানির প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরার নলডোক পূর্বপাড়া এলাকার একটি টিনশেড বাসায়। সেখানে আরও ১০০ থেকে ১১০ জন প্রশিক্ষণার্থী দেখতে পান।

মামলার এজাহারে বলা হয়, চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর বাদী কাশেম জানতে পারেন, চাকরি দেওয়ার নামে টুগেদার ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস প্রতারণা করছে। তিনি প্রতারণার শিকার। পরে র‍্যাব-৪–কে বাদী এই বিষয় জানান।

ঢাকার আদালতকে উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ এক প্রতিবেদন দিয়ে বলছে, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন আসামিরা।

গ্রেপ্তার ৩০ আসামি হলেন বেলায়েত হোসেন (২৭), শরীফ (২৪), সাইফুল ইসলাম (২৮), গোলাম কিবরিয়া (৩৮), একরামুল হাসান (২৫), মহাই মিনুল ইলাসম (৩০), সজিব শেখ (২৫), তারেক (২৫), মিথুন বিশ্বাস (২৪), ফয়সাল আল মাহমুদ (২৩), শফিকুল ইসলাম (২২), সুমন সরকার (২১), শান্ত চন্দ্র মিত্র (২১), রেজভী আহম্মেদ (১৯), মহসিন হোসেন (২১), লিটন দাস (২৩), হালিম মিয়া (২৩), সুমন চাকমা (২৩), মেহেদী হাসান (২২), আজিজুর রহমান (২৫), আমজাদ হোসেন (২৪), পলাশ হোসেন (২১), মোশাররফ হোসেন (২২), আজাদ খান (২২), মমিনুর হমান (২১), কনক মালাকার (২০), সজিব বিশ্বাস (২০), সুমন হোসেন (২২), ইমরান মোল্লা (২১) ও শফিকুল ইসলাম (২১)। মামলার পলাতক আসামিরা হলেন রাশেদুল ইসলাম সুমন (৪৫), জিয়াউর রহমান জিয়া (৫৮), নাছির হায়দার, নজরুল ইসলাম (৪০), আবুল কাশেম ও মাহবুবুল ইসলাম।