ভারতীয় নারীর মরদেহ উদ্ধারের মামলায় স্বামী রিমান্ডে

ঢাকার সিএমএম আদালত
ঢাকার সিএমএম আদালত

রাজধানীর পল্লবী এলাকায় জাহিদা বেগম (৩৮) নামের এক ভারতীয় নারীকে হত্যার অভিযোগে তাঁর বাংলাদেশি স্বামীকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।

আসামির নাম নজরুল ইসলাম ওরফে আনোয়ার হোসেন (৪৫)। তাঁর গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার দৌলতদিয়া গ্রামে।

১৮ জানুয়ারি পল্লবীর একটি ভবনের ছয়তলার ফ্ল্যাট থেকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তখন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই ) শাহ আলম একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্লবী থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ আবদুল মাবুদ প্রথম আলোকে বলেন, পরে প্রযুক্তির সহায়তায় ওই নারীর পরিচয় উদ্ধার করা হয়। নাম জাহিদা বেগম। ডাকনাম বিউটি। ওই নারী ভারতীয় নাগরিক। আন্দামান-নিকোবর দীপপুঞ্জের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। ১৯৯৫ সালে ফরিদপুরের মফিজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ভারতের আন্দামানে যান। সেখানেই তাঁদের পরিচয় হয়। একপর্যায়ে জাহিদাকে বিয়ে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন মফিজুল। পরবর্তী সময়ে তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে।

পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল মাবুদ বলেন, বিচ্ছেদ হওয়ার পর জাহিদা ফরিদপুর থেকে ঢাকায় এসে পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। এক যুগ আগে বাসের সুপারভাইজার নজরুল ইসলাম (আসামি) নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে নজরুল জাহিদাকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। অবশ্য নজরুল আগ থেকে বিবাহিত ছিলেন। তাঁর দুই সন্তান ছিল। জাহিদাকে বিয়ে করায় নজরুলের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান তাঁর প্রথম স্ত্রী। কিন্তু সন্তান না হওয়ায় জাহিদা ও নজরুলের মধ্যে মনোমালিন্যের সূত্রপাত ঘটে। এদিকে এক বছর আগে পরিবহন খাত থেকে নজরুলের চাকরি চলে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন তিনি।

ঢাকার আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে পল্লবী থানার পুলিশ বলছে, ১৭ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে জাহিদা বেগমকে হত্যা করে তাঁর লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে পালিয়ে যান আসামি নজরুল ইসলাম। দাম্পত্য কলহের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে জাহিদা বেগমকে হত্যা করেন এই আসামি।

মামলার এজাহার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি পল্লবী এলাকার একটি ভবনের ছয়তলায় ফ্ল্যাট ভাড়া নেন জাহিদা বেগম ও নজরুল ইসলাম।

পল্লবী থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ আবদুল মাবুদ বলেন, ভারতীয় নাগরিক জাহিদা বেগম হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য নজরুলকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনাস্থল থেকে মামলার আলামত হিসেবে একটা বঁটি, একটি ওড়না ও চাদর জব্দ করা হয়েছে।