পেঁয়াজের রাজ্যেই টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে দীর্ঘ সারি

নতুন পেঁয়াজ উঠলেও খুচরা বাজারে দাম এখনো কেজি ১০০ টাকার বেশি। তাই ৩৫ টাকা কেজির টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে মানুষের ভিড়। গতকাল বিকেলে পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ সড়কে।  ছবি: প্রথম আলো
নতুন পেঁয়াজ উঠলেও খুচরা বাজারে দাম এখনো কেজি ১০০ টাকার বেশি। তাই ৩৫ টাকা কেজির টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে মানুষের ভিড়। গতকাল বিকেলে পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ সড়কে। ছবি: প্রথম আলো

পেঁয়াজ উৎপাদনে শীর্ষে থাকা জেলাগুলোর মধ্যে পাবনা অন্যতম। জেলার সুজানগর ও সাঁথিয়া উপজেলা পেঁয়াজের রাজ্য হিসেবে পরিচিত। উপজেলাগুলো থেকে বাজারে সরবরাহ হচ্ছে আগাম জাতের নতুন পেঁয়াজ। তবু জেলায় পেঁয়াজের দাম কমেনি।

সর্বশেষ গত বুধবার সুজানগর পৌর পাইকারি বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। জেলা সদরের বাজারগুলোতে এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। ফলে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সুলভ মূল্যে পেঁয়াজ কিনতে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রে দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

টিসিবির বিক্রয় প্রতিনিধি শেখ রুমি জানান, শুধু পাবনা জেলা শহরে প্রতি সপ্তাহে তিন টন করে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি মঙ্গল, রবি ও বৃস্পতিবার জেলা শহরের ট্রাফিক মোড়, অনন্ত বাজার ও গোপালপুর এলাকায় এই পেঁয়াজ বিক্রি হয়। প্রত্যেক ক্রেতাকে ৩০ টাকা কেজি মূল্যে দুই কেজি করে পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে। সুলভ মূল্যে এই পেঁয়াজ কিনতে দীর্ঘ সারি তৈরি হচ্ছে।

গতকাল বিকেলে শহরের ট্রাফিক মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, একটি কাভার্ড ভ্যান থেকে টিসিবির প্রতিনিধিরা পেঁয়াজ সরবরাহ করছেন। পেঁয়াজ কিনতে প্রায় ২০০ গজে মানুষের দুটি দীর্ঘ সারি। লাইনে থাকা কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে প্রচুর আগাম জাতের নতুন পেঁয়াজ সরবরাহ হচ্ছে। কিন্তু এখনো দাম কমেনি। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে টিসিবির সরবরাহ করা পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।

সুজানগর হাটের পাইকারি ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, সুজানগর পাইকারি হাট থেকে বিভিন্ন জেলায় পেঁয়াজ সরবরাহ করা হয়। ফলে  প্রতিযোগিতা করেই পেঁয়াজ কিনছেন। এতে দাম কমছে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে ৯ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের মূলকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। এ থেকে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে। উৎপাদিত আগাম জাতের পেঁয়াজ ৮০ শতাংশ বাজারে চলে এসেছে। অন্যদিকে নতুন করে আরও প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে মৌসুমি হালি পেঁয়াজ রোপণ হয়েছে। এই  পেঁয়াজ বাজারে আসতে আরও অন্তত ৪৫ দিন সময় লাগবে।

সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মঈনুল হক বলেন,  মূলকাটা পেঁয়াজের পাশাপাশি কিছু উঁচু জমিতে আগাম মৌসুমি হালি পেঁয়াজ রোপণ হয়েছে। মূলকাটা শেষ হওয়ার আগেই সে পেঁয়াজ বাজারে আসবে।