আইসিজের আদেশ: স্বস্তির পাশাপাশি বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ে রোহিঙ্গারা

প্রথম আলো ফাইল ছবি।
প্রথম আলো ফাইল ছবি।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন, ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া ও হামলার মুখে সন্তানদের নিয়ে কোনো রকম পালিয়ে এসেছিলেন রোহিঙ্গা নারী আনোয়ারা বেগম। বাংলাদেশে আসার পর শুনেছেন, স্বামীকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। হৃদয়ে এখনো দগদগে সেসব স্মৃতি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিজে) বৃহস্পতিবারের আদেশ কিছুটা হলেও স্বস্তি বয়ে এনেছে তাঁর জীবনে।

গতকাল নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আইসিজে অন্তর্বর্তী আদেশ দেন। এর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘ কনভেনশন অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের
সুরক্ষা দিতে হবে। গণহত্যার প্রমাণ ধ্বংস করা যাবে না ইত্যাদি।

আইসিজের আদেশে স্বস্তি প্রকাশ করে কক্সবাজারের টেকনাফের লেদা শিবিরে থাকা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারের বিচারের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। অং সান সুচি একজন মিথ্যুক। আদালতে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। এখন মরে গেলেও শান্তি পাব।’

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হামলার মুখে পালিয়ে আসা রশিদা বেগম ও মরিয়ম খাতুনও একই রকম কথা বলেন। তবে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ মিয়ানমার সরকার এসব আদেশ কতটুকু বাস্তবায়ন করবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

গতকাল দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত টেকনাফের লেদা, মোচনী, নয়াপাড়া, জাদিমোরা, শালবাগান ও লেদা নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির ঘুরে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

টেকনাফের লেদা নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের (এবিসি) ব্লক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আশা করেছিলাম, আদালতের আদেশে রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা ধন-সম্পদ, জমিজমা ও নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করা হবে। তবে সেটি না হলেও রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করতে আদালত আদেশ দিয়েছেন। তাকে স্বাগত জানাই।’

আদালতের আদেশ মিয়ানমার সরকার কতটুকু বাস্তবায়ন করবে, তা নিয়ে রোহিঙ্গারা ধোঁয়াশার মধ্যে আছেন বলে জানান ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের’ চেয়ারম্যান মুহিব উল্লাহ। তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকারের একগুঁয়েমির কারণে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে নিজের জন্মভূমি থেকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে।