ধুলায় ধুলায় অতিষ্ঠ মানুষ

যানবাহন চললেই উড়ছে ধুলা-বালি। গতকাল দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের কোর্ট রোডের চৌমোহনা এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
যানবাহন চললেই উড়ছে ধুলা-বালি। গতকাল দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের কোর্ট রোডের চৌমোহনা এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজার শহরের কোর্ট রোডের চৌমোহনা এলাকায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলছে। কালভার্ট নির্মাণের জন্য আশপাশের স্থানে স্তূপ করে রাখা হয়েছে বালু। এ ছাড়া কালভার্টের দুই পাশে খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। এতে করে এই এলাকা দিয়ে এখন দিনরাত যানবাহন চলাচলের সময় ধোঁয়ার মতো বালু উড়ছে। ধুলায় ধুলায় সড়কের দুই পাশের ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। হাজারো শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের ধুলাবালির মধ্য দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে।

ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় মাসখানেকের অধিক সময় ধরে মৌলভীবাজার শহরের কোর্ট রোডের চৌমোহনা এলাকায় সওজের উদ্যোগে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কালভার্ট নির্মাণের কারণে কালভার্টের দুই পাশে খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। এতে সড়কের মাটি বেরিয়ে এসেছে। এ ছাড়া কালভার্টের পাশে স্তূপ করে রাখা হয়েছে নির্মাণকাজে ব্যবহারের জন্য বালু। এই সড়কটি শহরের অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এই সড়ক দিয়ে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, কাশীনাথ আলাউদ্দিন হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, কেজি ফ্লাওয়ার্স অ্যান্ড হাইস্কুলসহ জেলা শহরের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মৌলভীবাজার পৌরসভা, কোর্ট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে আসা–যাওয়া করতে হয়। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই পথ দিয়ে হেঁটে চলাচল করেন। জেলার অভ্যন্তরীণ এবং ঢাকা-মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের ছোট–বড় হাজারো যানবাহন চলাচল করে এই সড়কে। কালভার্টের আশপাশে সড়কের দুই পাশে রয়েছে শতাধিক ছোট–বড় দোকান। এখন শুকনো মৌসুম। যানবাহন চলাচলের সময় কালভার্ট নির্মাণের স্থান থেকে দক্ষিণ দিকে পৌরসভা এলাকা এবং উত্তর দিকে প্রায় চৌমোহনা পর্যন্ত আধা কিলোমিটারজুড়ে প্রচুর ধুলাবালি উড়ছে। ধুলায় ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন ব্যবসায়ী ও পথচারীরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কালভার্টের স্থানটি ঘুরে দেখা গেছে, যানবাহন চলাচলের সময় ধোঁয়ার মতো বালুতে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে এলাকা। একসঙ্গে অনেকগুলো গাড়ি যখন স্থান অতিক্রম করছে, ধুলা কুয়াশার মতো গাঢ় হয়ে উড়তে থাকে। দোকানের কাচ, মালামালসহ আসবাবপত্রে ধুলার স্তর জমে গেছে। শিক্ষার্থী, পথচারীদের অনেকেই নাক বন্ধ করে স্থানটি অতিক্রম করছেন। এখানে ধুলা নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা নেই। দু-একটা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে নিজ উদ্যোগে পানি ছিটিয়ে সাময়িক ধুলা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু অসংখ্য গাড়ি চলাচল করায় কিছু সময়ের মধ্যেই স্থানটি আবার ধুলায় একাকার হয়ে যাচ্ছে।

কালভার্টের পাশের পান ব্যবসায়ী গণি মিয়া গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এত ধুলা। ধুলার কারণে দুই দিনে সর্দি হয়ে গেছে।’ কাছের আরেক ব্যবসায়ী জামাল মিয়া বলেন, ‘শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে এ রকম একটি স্থান। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখানে। এখন সব সময় আমাদের ধুলার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। ধুলার কারণে সুস্থভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করা মুশকিল হয়ে পড়ছে। এখানে যদি দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানোর ব্যবস্থা হতো, তাহলে হয়তো এত ধুলাবালি হতো না। ধুলার কারণে মানুষ শুধু অতিষ্ঠ নয়, অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’

মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সওজ বিভাগ এখানে কালভার্ট নির্মাণের কাজ করছে। আমি সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ধুলা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলছি।’