এখনো দুই বাংলাদেশির লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর পোরশা উপজেলার দুয়ারপাল সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ এখনো ফেরত দেয়নি ভারত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বৈঠকে ভারত এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে লাশ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল।

নিহত দুজন হলেন উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের রনজিত কুমার ও কাঁটাপুকুর গ্রামের কামাল আহমেদ

বিজিবি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের রনজিত কুমার, চকবিষ্ণুপুর দিঘীপাড়ার মফিজ উদ্দিন ও কাঁটাপুকুর গ্রামের কামাল আহমেদ আরও ১০-১২ জনের সঙ্গে পোরশার দুয়ারপাল সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে ঢোকেন। বৃহস্পতিবার ভোরে গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফের সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় অন্যরা পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও মফিজ, কামাল ও রনজিত বিএসএফের গুলিতে মারা পড়েন। নিহত ওই তিন বাংলাদেশির মধ্যে মফিজ উদ্দিনের লাশ দুয়ারপাল সীমান্ত এলাকার ২৩১ নম্বর প্রধান স্তম্ভের ১০ নম্বর উপস্তম্ভের কাছে বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় ২০০ গজ ভেতরে নীলমারী এলাকায় পাওয়া যায়। অপর দুজন রনজিত কুমার ও কামালের লাশ পড়ে ছিল সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে ভারতের অংশে। লাশ দুটি বিএসএফের সদস্যরা নিয়ে যান।

এ নিয়ে গতকাল বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দুয়ারপাল সীমান্তের শূন্যরেখায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে দুই ঘণ্টাব্যাপী পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে প্রতিবাদ জানায়। বিএসএফ গুলি করে তিন বাংলাদেশিকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে। বৈঠকে লাশের ময়নাতদন্তসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে আজ শুক্রবার ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করে বিএসএফ।

নিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম শাহ্ বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় নানা ব্যবসায়িক কাজে দুই দেশের মানুষ চলাচল করে। বিচার ছাড়া এভাবে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা মানবাধিকার লঙ্ঘন। মানুষকে হত্যা করে লাশ ফেরত না দেওয়াটাও একটা অন্যায়। আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী লাশ ফেরত আনতে বিজিবির দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

আজ বিকেলে বিজিবির নওগাঁ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম আরিফুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএসএফের পক্ষ থেকে গুলি করে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের পক্ষ থেকে আজ (শুক্রবার) বিকেল পর্যন্ত লাশ ফেরত আনার বিষয়ে বিজিবি কিংবা স্থানীয় থানা পুলিশের কাছে দাবি করা হয়নি। তবে নিহত বাংলাদেশিদের লাশ ফেরত আনার বিষয়ে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।’