দেশে এসে যা শিখলেন গণফোরামের রেজা কিবরিয়া

গণফোরামের এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া। নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ, ২৪ জানুয়ারি। ছবি: হাফিজুর রহমান
গণফোরামের এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া। নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ, ২৪ জানুয়ারি। ছবি: হাফিজুর রহমান

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, তিনি বাংলাদেশে এসে শিখলেন ভোট ছাড়া নির্বাচন করে ক্ষমতার মসনদে বসা যায়, অপরাধ ছাড়া মামলার আসামি হওয়া যায় এবং পেঁয়াজ ছাড়া রান্না হয়।

আজ শুক্রবার বিকেলে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার নতুন বাজার মোড়ে গণফোরাম আয়োজিত এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রেজা কিবরিয়া কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দেশে ফেরেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে রেজা কিবরিয়া বলেন, এ সরকারের আমলে তাঁর বাবা সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যার বিচার হবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো তাঁর বাবার হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে অসমাপ্ত তদন্তের মাধ্যমে বিচারের চেষ্টার অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমার মা বিচারের দাবিতে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু বিচার তিনি দেখে যেতে পারেননি। এ সরকারের আমলে আমার বাবার হত্যার বিচার হবে না।’ সরকার পরিবর্তন হলে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রেজা কিবরিয়া বলেন, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের ভিশন হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, গণমুখী রাজনীতি, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। তাঁর দল গণফোরাম ক্ষমতায় গেলে ৫০ হাজার কোটি টাকা দেশের গ্রামের উন্নয়নে এবং ৮০ লাখ টাকা করে প্রত্যেক গ্রামে ব্যয় হবে। এভাবে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর দলের।

রেজা কিবরিয়া বলেন, দেশে সুস্থ রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে মানুষের মন জয় করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি গণফোরামের পাঁচ দফা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে জনগণ সব রাজনৈতিক ক্ষমতার মালিক, বাংলাদেশের মানুষের জন্য এ দেশ পরিচালিত হবে, বাক্‌স্বাধীনতা ও ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অধিকার সংরক্ষণ, দারিদ্র্য নিয়ে জন্মালে কাউকে সারা জীবন দরিদ্র হয়ে থাকতে হবে না এবং আমাদের সন্তানদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

রেজা কিবরিয়া বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, তিনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, তাঁর স্বামী বীর উত্তম খেতাবধারী একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাঁকে বীর উত্তম উপাধি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই দিয়েছিলেন। তাঁর মতো নারী এভাবে কারাগারে বিনা চিকিৎসায় থাকতে পারেন না।

গণফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য ও নবীগঞ্জ উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মুরাদ আহমদের সঞ্চালনায় কর্মী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি ও সিলেট-২ আসনের সাংসদ মোকাব্বির খান, নির্বাহী সভাপতি মহসীন রশীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা গণফোরাম আহ্বায়ক আনসার খান ও গণফোরাম সিলেট মহানগর আহ্বায়ক এমদাদুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আজাদ আলী প্রমুখ।