যত বেশি নারী চালক, দুর্ঘটনার ঝুঁকি তত কম: কাদের

ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নারী গাড়িচালকেরা নিয়ম মেনে চলেন, ঠান্ডা মাথায় গাড়ি চালান। তাঁরা নেশা করেন না, দায়িত্ব পালনের সময় মোবাইল ফোনে কথাও বলেন না। তাই যত বেশি নারী চালক নিয়োগ দেওয়া হবে, সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি ততটাই কমবে।’

আজ শনিবার ব্র্যাকের আয়োজনে নারী গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ-পরবর্তী সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘উইমেন বিহাইন্ড দ্য হুইল ফর রোড সেফটি’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আখতার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ। ব্র্যাকের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

সড়ক নিরাপত্তা এবং নারীবান্ধব পরিবহনব্যবস্থার জন্য পেশাগত নারী গাড়িচালক তৈরির কার্যক্রমে নারী প্রশিক্ষণার্থীদের এই অষ্টম ব্যাচে মোট ১১ জন প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন। উত্তরার ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে ৩ মাসের আবাসিক প্রশিক্ষণ শেষে সবাই উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং লাইসেন্স পেয়েছেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তারপর ব্র্যাকের প্রশাসন এবং সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক আহমেদ নাজমুল হোসাইন ‘উইমেন বিহাইন্ড দ্য হুইল ফর রোড সেফটি’ বিষয়ে প্রেজেন্টেশনে উল্লেখ করেন, ২০১১ সালে ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুল চালু হয়। মূলত পিছিয়ে পড়া পরিবারের সদস্যদের এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তিন মাসের আবাসিক প্রশিক্ষণে মৌলিক গাড়ি চালনা, সুরক্ষামূলক গাড়ি চালনা, সাধারণ মেরামতি কাজ ও পেশাগত আচরণ শেখানো হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই ব্র্যাকের মতো আরও প্রতিষ্ঠান নারীর স্বনির্ভরতা অর্জনে এগিয়ে আসুক। গাড়ি চালনায় কয়েক মাস প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কোনো নারী যদি চাকরি না পান, তাহলে এই উদ্যোগ পুরোটাই ব্যর্থ হবে। তাই সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারী গাড়িচালকের চাকরির পথ সুগম করতে হবে। সরকার এই বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সচিব কাজী রওশন আখতার বলেন, ‘ব্র্যাকেরই একটি গবেষণায় আমরা দেখেছি, গণপরিবহনে ৯৪ শতাংশ নারী কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হন। তাই এ দেশে নারী গাড়িচালকদেরও পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এর কারণগুলো আমাদের সম্মিলিতভাবে খুঁজে বের করতে হবে, সমাধানের উদ্যোগও যৌথভাবে নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেমবন, সাহিত্যিক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, ব্র্যাকের পরিচালক আন্না মিনজসহ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, নিরাপদ সড়ক চাই ও পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা।